পোশাক শিল্পের সংকট মোকাবেলায় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

পোশাক শিল্পের সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রামের পোশাক শিল্প মালিকদের সাথে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার নগরীর এলাকায় বিজিএমইএ’র ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময়কালে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন- রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প বর্তমানে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। কোভিড-১৯-এর আঘাতের ক্ষত না শুকাতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে অর্থনীতির স্মরণকালের অস্থিরতায় আমাদের তৈরি পোশাক শিল্পের প্রধান রপ্তানি বাজার ইউরোপ ও আমেরিকায় মুদ্রাস্ফীতির কারণে রপ্তানি বাণিজ্য অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। এসব প্রতিক‚লতা সত্তে¡ও এ শিল্পের প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরে ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পোশাক শিল্প মালিকদের মেধা, শ্রম ও উদ্যোগের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।আন্তর্জাতিকভাবে বর্তমান পর্ষদের আরএমজি ক‚টনীতির বিভিন্ন অগ্রগতি তুলে ধরে তিনি বলেন, এ শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি ও ব্রান্ডিং নিশ্চিতকল্পে বিজিএমইএর উদ্যোগে ঢাকায় আগামী ১২ থেকে ১৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এ্যাপারেল সামিট ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ (এমআইবিডব্লিউ)-২০২২ বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ভাবমূর্তি বৃদ্ধিসহ বিশ্ব বাজারে এ শিল্পের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। নতুন ও তরুণ উদ্যোক্তাদেরকে এ শিল্পের বিকাশ ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনে যুগোপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহার ও ডিজাইনিং ব্রান্ডিং-এর সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে টিকে থাকতে হলে আমাদেরকে অনেক বেশি সচেতনতা ও বিচক্ষণতার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
মতবিনিময়কালে তিনি পোশাক শিল্পের কল্যাণে বর্তমান পর্ষদের বিভিন্ন অর্জনসমূহ তুলে ধরেন এবং পোশাক শিল্পের মালিক পক্ষ কর্তৃক উত্থাপিত বিরাজমান সমস্যাসমূহ দ্রæত সমাধানের লক্ষ্যে সরকার সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর সমূহের সাথে যোগাযোগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
স্বাগত বক্তব্যে বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের জাতীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক শিল্প। বিশেষ করে বিগত কভিডকালীন সময়ে বিশ্ব যখন মুখ থুবড়ে পড়েছিল তখনও আমাদের এ শিল্প উৎপাদন কার্যক্রম চালু রেখে দেশের প্রবৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে যে অসামান্য অবদান রেখেছে তা নজিরবিহীন। কভিডকালীন সংকট উত্তরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও বিচক্ষণতায় আমরা যেভাবে সাফল্য অর্জন করেছি তা ধরে রাখতে হলে এ শিল্পে বিরাজমান সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের ইতিবাচক সহযোগিতা কামনা করেন।
ধন্যবাদসূচক বক্তব্যে বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি এস.এম. মান্নান কচি বলেন, বিজিএমইএ’র বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহীতার সাথে পোশাক শিল্পের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী’র সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় তৈরি পোশাক শিল্পের বিভিন্ন সমস্যাদি যেমন- কাস্টমস্্, বন্ড, ভ্যাট, ট্যাক্স, ব্যাংকিং, গ্যাস-বিদ্যুৎ, প্রাইভেট আইসিডি, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার, কমপ্লায়েন্স, শ্রম অসন্তোষ ইত্যাদি সহ নানা বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ’র প্রাক্তন সহ-সভাপতি এএম চৌধুরী (সেলিম), প্রাক্তন পরিচালক মো. লিয়াকত আলী চৌধুরী, মোহাম্মদ মুসা, অঞ্জন শেখর দাশ, মোহাম্মদ সাইফ উল্ল্যাহ মনসুর, মোহাম্মদ আতিক ও খন্দকার বেলায়েত হোসেনসহ বিভিন্ন পোশাক শিল্পের মালিকবৃন্দ।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান চট্টগ্রামে বিজিএমইএ’র ৩০টি নতুন সদস্য প্রতিষ্ঠানকে নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে বিশেষ শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন এবং বিজিএমইএ ভবন চত্বরে বৃক্ষরোপণ করেন।
এ সময় সিনিয়র সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দীন ও পরিচালক তানভীর আহমেদ, মো. খসরু চৌধুরী, আবদুল্লাহ হিল রাকিব, হারুন-অর-রশিদ, রাজীব চৌধুরী, ব্যারিষ্টার ভিদিয়া অমৃত খান, এ এম শফিউল করিম (খোকন), মো. হাসান (জ্যাকি), এম এহসানুল হক, মিরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার), বিজিএমইএ’র প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, এসএম নুরুল হক, এসএম আবু তৈয়ব, মঈনউদ্দিন আহমেদ (মিন্টু) সহ বিজিএমইএর প্রাক্তন পরিচালক, সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও পোশাক শিল্পের মালিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।