পেয়ারা বিক্রেতার মৃত্যুর গুজবে সড়কে ব্যারিকেড

43

কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেকে গতকাল সন্ধ্যায় সাদা (সিভিল) পোশাকে পেয়ারা কিনতে আসেন দুই ডিবি পুলিশ সদস্য। বিক্রেতা তাদেরকে এক ডজন পেয়ারার দাম দেন ৬০ টাকা। কিন্তু ডিবি পুলিশ সদস্যরা ৩০ টাকায় এক ডজন পেয়ারা কিনতে চান। এ দামে রাজি না হওয়ায় পেয়ারা বিক্রেতা মোহাম্মদ আলীকে (২৯) লাথি দেন ডিবি পুলিশ সদস্যরা। এতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন বিক্রেতা। এক পর্যায়ে পেয়ারা বিক্রেতা মারা গেছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ গুজবে স্থানীয় জনতা রাস্তায় ব্যারিকেড দেন এবং ডিবি পুলিশের এসআই জাহেদ হোসেনকে আটক করেন। আর পালিয়ে যান ডিবি পুলিশের অপর সদস্য।
এক পর্যায়ে পুলিশ পেয়ারা বিক্রেতার মৃত্যু হয়নি এবং তিনি সুস্থ আছেন বলে উত্তেজিত জনতাকে আশ্বস্ত করলেও একটি পক্ষ পেয়ারা বিক্রেতার মৃত্যুর গুজবে উস্কানি দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড ও পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালায়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে বলে জানা যায়।
গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশের সাথে স্থানীয়দের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা চলছিল। পেয়ারা বিক্রেতা কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের গোলালপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সৈয়দের পুত্র।
জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় মইজ্জ্যারটেকে পেয়ারা বিক্রেতা মোহাম্মদ আলীর কাছে এক ডজন পেয়ারার দরদাম করেন দুই ডিবি পুলিশ সদস্য। পেয়ারা বিক্রেতা ৬০ টাকা দাম বললে তারা ৩০ টাকা দিতে চান। কিন্তু রাজি হননি বিক্রেতা। এ কারণে তাকে লাথি দেন পুলিশ সদস্যরা। ওই সময় বিক্রেতা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তাকে একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ সময় পেয়ারা বিক্রেতা মারা গেছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কর্ণফুলী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহেদুল ইসলাম পেয়ারা বিক্রেতার মৃত্যু হয়নি এবং দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে সকলকে শান্ত করেন। কিন্তু এরপর একটি গ্রূপ উস্কানি দিয়ে আটক ডিবি পুলিশ সদস্যদেরকে কর্ণফুলী থানা পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশ বক্সে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ, ফাঁকা গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত পৌনে ১০টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার জাহেদুল ইসলাম জানান, টোকাই শ্রেণির একদল লোক ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের ছোড়া পাথরের আঘাতে কয়েক জন পুলিশ সদস্য আহত হন। তবে তাদের নাম জানা যায়নি। ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশ বক্স।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। কারা এ ঘটনায় জড়িত, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের খুঁজে বের করা হবে।