পেটের পীড়া নিয়ে ১২৪ জন হাসপাতালে

26

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে গত দুইদিনে বিভিন্ন বয়সী ১২৪ জন রোগী বিআইটিআইডি হাসপাতাপলে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশ রোগী ফ্রি পোর্ট, ইপিজেড, পতেঙ্গা, হালিশহর ও উত্তর আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা। আক্রান্ত ২০ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এদের মধ্যে সাতজনের নমুনায় কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (আইইডিসিআর) চিঠি পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিস।
জানা যায়, গত দুইদিনে নগরীর ফ্রি পোর্ট, ইপিজেড, পতেঙ্গা, হালিশহর ও উত্তর আগ্রাবাদসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এসব এলাকা থেকে গত দুই দিনে বিভিন্ন বয়সী ১২৪ জন রোগী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সাতজনের নমুনায় কলেরার জীবাণু পাওয়া যায়।
এসব এলাকা থেকে গত ১৫ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট সকাল পর্যন্ত ৬৯ জন এবং মঙ্গলবার থেকে গতকাল বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আর সর্বশেষ তথ্য মতে, গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত বিআইটিআইডিতে ৯৫ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাকিরা চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে গেছেন।
বিআইটিআইডির সহযোগী অধ্যাপক মো. মামুনুর রশীদ জানান, বুধবারও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে সব বয়সের রোগী রয়েছে। তবে এদের মধ্যে মাঝবয়সী ও পুরুষের সংখ্যা বেশি। একই পরিবারের একাধিক সদস্যও আছেন। এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনগোষ্ঠি। যাদের স্যানিটেশন ব্যবস্থা তেমন ভালো নয়।
এদিকে এমন পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার আক্রান্ত রোগীদের দেখতে বিআইটিআইডিতে পরিদর্শনে যান সিভিল সার্জন ইলিয়াছ চৌধুরী। তিনি বলেন, আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী ওয়াসার সরবরাহ করা পানি না ফুটিয়ে পান করার কথা জানিয়েছেন। তাদের পায়খানা ও বমি হচ্ছে। দুয়েকজনের জ্বর আছে। যাদের জ্বর আছে, তাদের ম্যালেরিয়া পরীক্ষাও করানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন বলেন, যেসব এলাকা থেকে রোগীরা আসছেন, সেখানে জলাবদ্ধতার সমস্যা আছে। প্রায় সময় এসব এলাকা জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়। গত সপ্তাহে এসব এলাকায় জোয়ারে নালা-নর্দমা, স্যুয়ারেজ লাইন ও সেফটি ট্যাংক সয়লাব হয়ে যায়।
এসব এলাকার জনগোষ্ঠি ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, নগরীর বিষয়গুলো সিটি কর্পোরেশন দেখাশোনা করে, তাই আমরা তাদেরকে অবহিত করেছি।
তারা কিভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তা এখনই সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে জানতে নমুনা সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখতে আমরা আইইডিসিআরকে চিঠি দিয়েছি। তারা এখনো কোনো কিছু জানায়নি। আশা করি, দ্রæত কাজ শুরু করবেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। পতেঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকা আমাদের টিম পরিদর্শন করেছে। জলাবদ্ধতার কারণে হয়তো ওয়াসার পাইপলাইনে দূষিত পানি ঢুকতে পারে। তবে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। সিভিল সার্জন ও ওয়াসার সাথে কথা বলে আমরা বিষয়টি নিয়ে এগোব।