পেঁয়াজ নিয়ে সুখবর দিতে পারলেন না বাণিজ্যমন্ত্রী

24

বেশ কিছুদিন থেকে দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বাড়লেও কমার বিষয়ে কোনো সুখবর দিতে পারলেন না বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বরং পেঁয়াজের বাজার দর স্বাভাবিক হতে আরও ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে বলে জানান তিনি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেটের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
টিপু মুনশি বলেন, ‘আজ (সোমবার) আমাদের কাছে যে রিপোর্ট এসেছে তাতে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। মন্ত্রণালয় থেকে আজ চট্টগ্রামে একটা টিম গেছে। একজন উপসচিবকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। খাতুনগঞ্জে গিয়ে তারা বাজার মনিটরিং করছেন। সবদিক দিয়েই আমরা দেখছি’। তিনি জানান, ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি প্রত্যাহার না করা, দেশে চাষ করা পেঁয়াজ না উঠা এবং আমদানির বড় লট না আসা পর্যন্ত বাজার একটু চড়াই থাকবে। আমরা আশা করছি, আগামী ১০ থেকে ১২ নভেম্বরের মধ্যে আমদানির বড় লট দেশে পৌঁছবে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১০ হাজার টন লটের পেয়াজ আসতে শুরু করেছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ৫০ হাজার টনের লট আসতে শুরু করবে। তখন বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়বে’। ভারত বেঙ্গালুরু জোন থেকে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘বেঙ্গালুরু থেকে ৯ হাজার টন পেঁয়াজ আসবে। তবে ভারতের যে অঞ্চল থেকে আমাদের দেশে পেঁয়াজ আসে (নাসিক) সেখান থেকে পেঁয়াজ রফতানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি। তবে আমরা যোগাযোগ করছি, নিষেধাজ্ঞা যেন প্রত্যাহার করা হয়’।
আরও ১৫ থেকে ২০ দিন বাজারে দামের প্রভাব থাকবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আগাম পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। তবে এখনও সেইভাবে উঠেনি। এ মাসের শেষ দিকে নিজস্ব পেঁয়াজ উঠবে’। টিপু মুনশি জানান, এস আলম গ্রুপ, সিটি গ্রুপ ও মেঘনা গ্রুপ ১০ থেকে ১২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করবে। ইতোমধ্যে জাহাজে উঠে গেছে, যেকোনো সময় তা দেশে পৌঁছবে। এস আলম ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আনার পরিকল্পনা করেছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে তা দেশে আসবে। গতকাল মিয়ানমার থেকে ১ হাজার টন পেঁয়াজ এসেছে। মিয়ানমারই আমাদের সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট দিচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘তিন থেকে চার হাজার টন পেঁয়াজ দেশে আসা দরকার, আমাদের দৈনিক চাহিদা ৬ হাজার টন। সব পেঁয়াজ তো বাইরে থেকে আসবে না, কিছু পেঁয়াজের উৎপাদন আমাদের রয়েছে। আর বাইরের মার্কেট থেকে পেঁয়াজ ঢুকছে। আশা করি দুই-একদিনের মধ্যে আরও ভালো রিপোর্ট পাবো’। মিয়ানমার থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ আমদনি করে সেগুলো ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। আমাদের কাছে যে রিপোর্ট আছে তাতে দাম পড়েছে ৪১ থেকে ৪২ টাকা। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে এটা নাকি বেড়ে ৭০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সঠিক দামটা জানার জন্য আমরা লোক পাঠিয়েছি’।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে একটা বড় ধরনের তথ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, সেটা হচ্ছে- যেহেতু শুল্ক নেই, কাস্টমস একটা দর ধরে ছাড় করে দেয়। ওই দাম যদি ধরা হয়, তাহলে সেটা হবে ভুল তথ্য। এজন্য প্রকৃত দাম কত আমাদের কর্মকর্তাদের তা জানতে বলেছি। যদি ৭০ টাকা হয় তাহলে ঢাকা পর্যন্ত আসতে ৯০ টাকা হয়ে যাবে। যদি ৪০-৪২ হয় তাহলে হয়তো ৬০ টাকা হবে। সঠিক হিসাব না পেলে কিছু বলা যাচ্ছে না’।