পুলিশের হামলায় পিটুনিতে ১০ সাংবাদিক আহত

16

ঢাকা প্রতিনিধি

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের প্রথম দিনের ভোটগ্রহণের সময় আওয়ামীপন্থীদের সঙ্গে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হইচই, হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে অন্তত ১০ জন সাংবাদিক পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল বুধবার আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে এটিএন নিউজের সাংবাদিক জাবেদ আক্তারের অবস্থা গুরুতর। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত অন্যরা হলেন- প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ ফটো সাংবাদিক শুভ্র কান্তি দাস, জাগো নিউজের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ফজলুল হক, আজকের পত্রিকার নূর মোহাম্মদ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের জান্নাতুল ফেরদৌস, বৈশাখী টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন ইব্রাহিম হোসেন, এটিএন বাংলার ক্যামেরা পার্সন হুমায়ুন কবির, মানবজমিনের আব্দুল্লাহ আল মারুফ।
ল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকার সাংবাদিকদের বলেন, কর্তব্য পালনরত সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাটি আইনমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে জানানো হয়েছে। তারা লিখিত অভিযোগ চেয়েছেন। আমরা তাদের লিখিতভাবে বিষয়টি জানাব।
এটিএন নিউজের জাবেদ আক্তার বলেন, সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও পুলিশ আমাকে পায়ের নিচে ফেলে নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত অডিটোরিয়ামে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
তাদের অডিটোরিয়াম থেকে বের করে দেওয়ার জন্য সেখানে প্রবেশ করে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য। তারা সেখানে ঢুকেই বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ নিচ্ছিলেন সাংবাদিকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অতর্কিতভাবে সাংবাদিকদের মারধর ও লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ।
এদিকে তফসিল অনুযায়ী বুধবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রথমদিনের ভোট শুরু হলেও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বাধার মুখে সাময়িক বন্ধ থাকে।
সকাল ৮টার আগে থেকেই ভোট দেওয়ার জন্য জড়ো হতে থাকেন আইনজীবীরা। এর মধ্যে সরকার সমর্থক আইনজীবীরা (সাদা প্যানেল) তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে যান। কয়েকজন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কিন্তু বাধা দেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেলের আইনজীবীরা। এরপর থেকে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।
দুই দিনব্যাপী এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল ৭টা থেকেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে ছিল শত শত পুলিশের উপস্থিতি। এছাড়া সাদা পোশাকেও দায়িত্ব পালন করছেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনকে ঘিরে দুই পক্ষের আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। যে কোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নজিরবিহীন নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে পুলিশ।