পীরে গারাংগিয়া হযরত বড় হুজুর ও ছোট হুজুর (রহ.)’র জীবন-দর্শনফখরুল ইসলাম নোমানী

161

ফখরুল ইসলাম নোমানী

মহান রাব্বুল আলামিন দুনিয়াবী আকাশকে যেমন সাজিয়েছেন অসংখ্য নক্ষত্রের মাধ্যমে তেমনি আধ্যাত্মিক আকাশকে সুশোভিত করেছেন তার প্রিয় বান্দা তথা গাউস, কুতুব, আবদাল, আওতাদ, নুক্বাবা, নুজাবা প্রমুখের মাধ্যমে। তাঁর সেই আধ্যাত্মিক আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন যুগশ্রেষ্ঠ অলিয়ে কামেল কুতবুল আলম, সুলতানুল আউলিয়া, পীরে গারাংগিয়া শাহ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মজিদ চাটগাঁমী (রহ.) (প্রকাশ গারাংগিয়া বড় হুজুর কেবলা) ও শাহ্ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রশীদ ছিদ্দীক হামেদী (রহ.) (প্রকাশ গারাংগিয়া ছোট হুজুর কেবলা)। উভয় হযরত পীর ছাহেব কেবলা আপন সহোদর ভ্রাতা। মধ্যখানে রয়েছে অপর ভ্রাতা হযরত শাহ সুফি হাফেজ আবদুল লতিফ (রহ.)। তাকেও গারাংগিয়া হযরত মেজ হুজুর বলা হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া গারাংগিয়া জামে মসজিদের সম্মুখে শায়িত রয়েছেন মহান দুই পীরে গারাংগিয়া বড় হুজুর ও ছোট হুজুর (রহ.)।
জন্ম ও বংশপরিচয় : ১৩১৪ হিজরি ১৩০১ বাংলা সালের মাঘ মাসে গারাংগিয়াস্থ নিজ বাড়িতে বড় হুজুরের জন্ম। হযরত বড় হুজুর কেবলা ও তাঁরই সহোদর হযরত ছোট হুজুর কেবলার শ্রদ্ধাভাজন আব্বাজান হজরত সুফি মুহাম্মদ আলাউদ্দিন মিয়াজি এবং পুণ্যবতী মাতার নাম মুছাম্মৎ রাহাতজান বেগম মতান্তরে মোছাম্মৎ রাহাতুন্নেছা বেগম। হজরত রাহাতজান বেগমের পৈতৃক বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের দরগাহ মুড়া। হুজুরদ্বয়ের আব্বাজান ১৩৫১ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। অপরদিকে-হুজুরদ্বয়ের আম্মাজান ইন্তেকাল করেন ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে মোতাবেক ১৩৫৭ হিজরি। উভয়ে গারাংগিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে চির-নিদ্রায় শায়িত। আজমগড়ী হযরত ও আরাকানী হযরত, হুজুরদ্বয়ের আব্বাজানের কবর শরীফ যেয়ারতকালীন কবরদ্বয়ের রৌশনির ব্যাপারে মন্তব্য করেন।
পীরে গারাংগিয়া ছোট হুজুর কেবলা (রহ.) : চৌদ্দশত হিজরীর মুজাদ্দেদ হযরত শাহ্ সৈয়দ আবদুল বারী (রহ.) এর পদাঙ্ক অনুসরণ এবং অলিকুল শিরোমণি হযরত শাহ্ মাওলানা হাফেজ হামেদ হাসান আলভী আজমগড়ী (রহ.) এর স্নেহধন্য হযরত ছোট হুজুর কেবলা (রহ.) তাঁরই অগ্রজ হযরত বড় হুজুর কেবলা (রহঃ) এর হুবহু ছায়া হিসেবে শরীয়ত ও তরীক্বতের মহান জিম্মাদারীর আঞ্জাম দেন। তিনি ছিলেন মুজাদ্দেদে যমান এবং অত্যন্ত উঁচু মাপের আল্লাহর মকবুল বান্দা। শাহ্ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ ছিদ্দীকী হামেদী (রহ,) তাঁদেরই একজন। হযরত ছোট হুজুর কেবলা (রহ.) কৃতিত্বের সাথে দারুল উলূম মাদরাসায় লেখাপড়া শেষ করেন। ছোট হুজুর কেবলা (রহ.) জীবনে তিনবার পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেছিলেন। প্রথমবার ১৯৫৬/৫৭ সালে চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দর থেকে সাগরপথে হজ্বে গমন করেছিলেন। ২য় বার ১৯৭৮ সালে এবং ৩য় বার ১৯৭৮ সালে ঢাকা থেকে হজ্বে গমন করেছিলেন। গারাংগিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় অবদান, তরীক্বতে পদার্পণ ও খেলাফত লাভের বিশাল ও বর্ণাঢ্য জীবন ছোট হুজুর কেবলা (রহ.)। ছোট হুজুর তীক্ষœ বুদ্ধি ও প্রখর ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব মানুষকে সম্মোহিত করে রাখত। ছোট হুজুর মেহমানদারীতে তীক্ষœ দৃষ্টি ছিল। তিনি নিয়মিত কোরান এবং হাদিসের চর্চা করতেন।
শিক্ষা ও কর্ম জীবন : বড় হুজুর নিজ বাড়িতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে পার্শ্ববর্তী মির্জাখিল গ্রামের হজরত আবদুল লতিফ (রহ.)-এর কাছে সকালে দ্বিনি শিক্ষা লাভ করতেন। সঙ্গে সঙ্গে মির্জাখিলের হজরত শাহ সুফি মাওলানা আবদুল হাই (রহ.)-এর কাছেও গমন করতেন ধর্মীয় জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে। অতঃপর বড় হুজুর পশ্চিম পটিয়ার শিকলবাহা মাদরাসায় কিছুদিন লেখাপড়া করেন। এরপর আরো উচ্চশিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর দারুল উলুম আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন এবং তত্সংলগ্ন মোহসেনিয়া মাদরাসা (বর্তমান হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ) থেকে ফাজিল পাস করেন। বড় হুজুর ওই সময় কৃতী ছাত্র বিধায় দারুল উলুম মাদরাসায় কিছুদিন শিক্ষকতা করেছিলেন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি গারাংগিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাদরাসা প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ১৯৭১ বা ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ পযন্ত দীর্ঘ ৫০ থেকে ৫২ বছর সর্বমহলে হজরত সুপারিনটেনডেন্ট সাহেব হুজুর হিসেবে পরিচিত হন। তখন তথা পাকিস্তান আমল পেরিয়ে বাংলাদেশ আমলের আশির দশক পর্যন্ত মাদরাসা-প্রধানদের সুপারিনটেনডেন্ট বলা হতো।
জ্ঞান ও ওয়াজ নসিহত : বড় হুজুর কোরআন, হাদীস, ফিকাহ, ইতিহাস ও ইসলামের অন্যান্য দিকে জ্ঞান ছিল খুবই গভীর। ধর্মীয় ব্যাপারে তাঁর প্রজ্ঞা যুগের শ্রেষ্ঠ আলেমগণকে পর্যন্ত বিস্মিত করেছে। কিন্তু তিনি সে জ্ঞান নিয়ে পান্ডিত্য প্রদর্শন করাকে ঘৃণা করতেন। তাঁর আলাপ আলোচনা ছিল অতি সহজ ও প্রাঞ্জল। তিনি ক্ষুদ্রতম মতভেদ নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ঘোর বিরোধী ছিলেন। সকল মুসলমান ঈমানী ভাই-তাদের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় রাখার জন্য চেষ্টা করাকে তিনি ঈমানী কর্তব্য মনে করতেন। সর্ব সাধারণের মাঝে আলেম সমাজের মর্যাদা সমুন্নত করতে তিনি আজীবন চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
তরীক্বতে পদার্পণ ও খেলাফত লাভের : ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের উত্তর প্রদেশের আজমগড়ী হযরত চট্টগ্রাম শহর থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চুনতী তাশরীফ আনলে চুনতীর হযরত শাহ ছাহেব কেবলার দাদার বাড়ি ইউসুফ মঞ্জিলে আজমগড়ী হযরতের হাতে ত্বরীকতে দাখিল হন। সে হতে হযরত বড় হুজুর কেবলা মাদ্রাসার খেদমতের পাশাপাশি দেশে ও আজমগড় গমন করে আজমগড়ী হযরত এর সংস্পর্শে থেকে ত্বরীকতের উচ্চস্তরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। আজমগড়ী হযরত চট্টগ্রাম তাশরীফ আনলে তাঁর নিকটে থাকতে তৎপর থাকতেন। সাথে সাথে জীবনে বহুবার আজমগড় গমন করেছিলেন পীর ছাহেব কেবলার নিকটে সময় কাটাতে। ১৩৬৬ হিজরিতে আরাকানি হযরত সহ আজমগড় গমন করলে তথায় অবস্থানকালে আজমগড়ী হযরত বড় হুজুর কেবলাকে খেলাফত দানে ভূষিত করেন। ১৩৬৬ হিজরি অর্থাৎ ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে। খেলাফত লাভের পর আজমগড়ী হযরত এর নির্দেশে সেরহিন্দে হযরত মুজাদ্দেদে আলফেসানী (রহ.) এর যেয়ারতে গমন করেন। অতঃপর উভয়ে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরার পর থেকে হযরত বড় হুজুর কেবলা তাবলীগে ত্বরীকতের সফর শুরু করেন। অনেক সময় আরাকানী হযরত এর সাথেও সফর করেন। হযরত আজমগড়ী (রহ.) এর অন্যতম খলিফা হযরত শাহ্ মাওলানা আব্দুস ছালাম আরকানী (রহ.) বারে বারে গারাংগিয়া সফর করতেন।
হজ্বব্রত পালন : বড় হুজুর ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম হজ্বব্রত পালন করেন। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ৪৯ জন সফর সাথী নিয়ে ছফিনায়ে মুরাদ জাহাজযোগে দ্বিতীয়বার হজ্বব্রত পালন করেছিলেন।
মেহমানদারী : বড় হুজুরের মেহমানদারীতে তীক্ষè দৃষ্টি ছিল। কোন মেহমান সে সাধারণ একজন ছাত্র হলেও তাঁর হুজরা শরীফে প্রবেশ করলে মেহমানদারী গ্রহণ ছাড়া আসতে পারতো না। ইন্তেকালের-পূর্ব মুহুর্তেও মেহমানদারীর প্রতি তাঁর সজাগ দৃষ্টি ছিল। চোখ খুললেই যদি মেহমান দেখতেন হাতের ইশারায় মেহমানদারীর ব্যবস্থা করতেন। তিনি গারাংগিয়া মাদরাসা দালানে তাঁর হুজরা কক্ষে বিভিন্ন শুকনা নাস্তা রাখতেন যাতে করে তৎক্ষণাৎ মেহমানদারী করা যায়।
আধ্যাত্মিকতা : বড় হুজুরের আধ্যাত্মিক জ্ঞান সাধন কর্মে প্রচুর মোশাহিদা করেন। তিনি মোরাকাবা মোশাহিদায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন। তাহাজ্জুত সহ-ফজরের নামাজের পর মোরাকাবা করতেন। এছাড়াও তিনি নিয়মিত কোরান এবং হাদিসের চর্চা করতেন। বড় হুজুর তীক্ষè বুদ্ধি ও প্রখর ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব মানুষকে সম্মোহিত করে রাখত।
গারাংগিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা : ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি গারাংগিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাদরাসার খেদমতের পাশাপাশি তাবলিগে তরিকতের খেদমতে দেশের বিভিন্ন স্থানে গমন করতেন। ফলে মাদরাসার মাধ্যমে যেমন অসংখ্য ছাত্র দ্বিনি ইলম লাভ করেছেন,তেমনি তরিকতে দাখিল হয়ে অসংখ্য লোক আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নৈকট্য লাভে সক্ষম হয়েছিলেন।
বড় হুজুর জীবনে অসংখ্য যোগ্য ছাত্র রেখে যান, এবং ৭৮ জন ব্যক্তিত্বকে খেলাফতদানে ভূষিত করেন। তিনি সরাসরি অথবা তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় শয়ের কাছাকাছি সরকারি মঞ্জুরীকৃত মাদরাসা প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তা ছাড়া অসংখ্য ইবতেদায়ি মাদরাসা, ফোরকানিয়া মাদরাসা, এতিমখানা, মসজিদ, খানকাহ, হেফজখানা রয়েছে, যা গণনা করা কষ্টসাধ্য। হজরতে গারাংগিয়ার জীবন্ত-কারামাত গারাংগিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠা। গারাংগিয়ার ঐতিহাসিক তিন দিন ব্যাপি সভা একটি দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। এটি আধ্যাত্মিকতার সূতিকাগারে পরিণত হয়। প্রতিবছর এই পবিত্র মাহফিলে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মুসলিম ভাইয়েরা আসেন দেশ বরেণ্য ওলামাদের ওয়াজ শুনে ইমানি চেতনাকে উজ্জীবিত করার জন্য।
তাকওয়া-পরহেজগারি : বড় হুজুরের দুনিয়াবিমুখ দৃষ্টিভঙ্গি সুন্নতের ওপর দৃঢ়তা, তাকওয়া-পরহেজগারির কারণে দেশের সব আকিদার ধর্মীয় আলেমদের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে যান। সব আকিদার ধর্মীয় বিজ্ঞ ব্যক্তিত্বরা তাঁর সঙ্গে মোলাকাত করে দোয়াপ্রার্থী হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। তাঁর মহান পীর আজমগড়ী হযরত বলে গেছেন ‘মেরে মজিদ কা খীমা ওয়াসী’ নজর আতা হে’। অর্থাৎ হযরত বড় হুজুর কেবলার মাঝে শরীয়ত ও ত্বরীকতের বিশালত্ব দেখতেছেন বলে পীর ছাহেব আজমগড়ী হযরত এ বাক্য বলেছিলেন। তাঁর মহান পীর আরও বলে গেছেন ‘বাঙ্গাল মে কই মুখলেছ হেত মজিদ হে’। বাস্তবেই গারাংগিয়া বড় হুজুর কেবলার শরীয়ত কেন্দ্রীক ত্বরীকতের বিশাল আনজাম ভাববার বিষয়। তিনি সৃষ্ট অসংখ্য অতি উঁচুমানের আলেম, মুফতি, মুহাদ্দেস, সুফি, দরবেশ রেখে গেছেন আরও রেখে গেছেন লক্ষ লক্ষ মুরিদ। শতের মত দাখিল থেকে কামিল পর্যন্ত বড় মাদ্রাসা বাদেও তাঁর ওসিলায় প্রতিষ্ঠিত কত মসজিদ, ফোরকানিয়া, খানকাহ,এতিমখানা ও হেফজখানা রয়েছে যা গণনা করে নির্ণয় করা সহজসাধ্য নয়। শুধু তাই নয়, হযরত বড় হুজুর কেবলার এত বেশি কারামত রয়েছে যে এই নিয়ে একাধিক গ্রন্থ রচনা করা যাবে।
চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহরে তাশরীফ : ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে থেকে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত হযরত বড় হুজুর কেবলা চট্টগ্রাম শহরে তাশরীফ আনলে যে মুরীদের ঘরে অবস্থান করুক না কেন তথায় লোকে লোকারণ্য হয়ে যেত। যেমনি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী, শিল্পপতিরা থাকত তেমনি বিভিন্ন আকিদার ধর্মীয় ব্যক্তিগণের সংখ্যা কম থাকত না। তখন প্রচার মাধ্যম অনুকূল ছিল না। কিন্তু বড় হুজুর চট্টগ্রাম শহরে তাশরীফ আনলেই লোকমুখে প্রচার হয়ে যেত। বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বা মুরীদের বাড়িতে তাশরীফ নিলে হুজুরের দোয়া পেতে শত শত লোক গিজগিজ করত। মাঝে মধ্যে ঢাকায় তাশরীফ নিলে সেখানেও একই অবস্থা দৃষ্টিগোচর হত।
ইন্তেকাল : বড় হুজুর ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দের ২১ অক্টোবর ৭ জিলকদ ১৯৩৭ হিজরি ৪ কার্তিক ১৩৮৪ বাংলা শুক্রবার সকালে গারাংগিয়ায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। ইন্তেকালের সময় বড় হুজুরের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। এই দিন বাদ আসর তাঁর প্রাণাধিক ছোট ভাই হজরত ছোট হুজুর আলহাজ্ব শাহ্ মাওলানা আবদুর রশীদ ছিদ্দীক হামেদী (রহ.) ইমামতিতে জানাজার পর গারাংগিয়া মাদরাসা মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়। গারাংগিয়ায় হযরত বড় হুজুর কেবলা (রহ.)-ও হযরত ছোট হুজুর কেবলা (রহ.)’র পাশাপাশি কবর শরীফদ্বয়ে নিয়মিত জেয়ারত জারী রয়েছে।
শেষ-কথা : বিশ্ব-বরেণ্য আলেমে দ্বিন-আধ্যাত্মিক জগতের সু-উচ্চ মকামের অধিকারী পীরে গারাংগিয়ার আদর্শিক জীবনধারা থেকে শিক্ষা নেয়ার মতো অনেক কিছু রয়েছে। হুজুরদ্বয়ে আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু কুরআন সুন্নাহর জীবন নির্দেশকা রয়ে গেছে। হুজুরদ্বয়ের দেখানো পথ অনুসরণ করে দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তি অর্জন আমাদেরকে ব্যক্তিগত জীবনে পীরে-গারাংগিয়ার আদর্শ বাস্তবায়ন করার তৌফিক দান করুন ও হুজুরদ্বয়ের জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন। আমীন।
লেখক : ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট