পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনার শুনানি ১২ জুন

19

ঢাকা প্রতিনিধি

ভারতে গ্রেপ্তার এনআরবি গেøাবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জারি করা রুলের পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১২ জুন দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলার অগ্রগতি জানাতে দুদকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
অর্থ পাচারকারীদের কোন ছাড় নেই বলে জানিয়েছেন আদালত। এ সময় অর্থপাচারকারীরা পৃথিবীর কোন দেশে গিয়েই শান্তি পাবে না বলেও উল্লেখ করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ গতকাল এমন মন্তব্য করেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন মানিক। অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আদালতের অবস্থান কঠোর উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আমরা আদেশ দিলে পৃথিবীর কোন দেশে গিয়েই অর্থপাচারকারীরা শান্তি পাবে না। আমাদের আদেশের কারণেই আজ পি কে হালদার সারাবিশ্বের মানুষের কাছে অর্থপাচারের অভিযোগে ভিন্নভাবে আলোচিত। এটা ভাবার সুযোগ নেই যে, অন্য দেশে গেলে আমরা তার বিরুদ্ধে আদেশ দিতে পারব না। শুধু অর্থপাচারকারীর অবস্থানটা চিহ্নিত করে দিলেই আমরা তার বিরুদ্ধে আদেশ দিতে পারি। দেশের অর্থপাচারকারীর বিষয়ে কোন ছাড় নেই।’
ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, গত বছরের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদার ও তার কয়েক সহযোগীকে গত শনিবার গ্রেপ্তার করে ভারতের ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট (ইডি)। পরদিন আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
এদিকে পি কে হালদারকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ‘সময়মতো’ উত্তর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
গতকাল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা একটা প্রক্রিয়া, তাই না? এই সপ্তাহান্তেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের দিক থেকে সময়মতো প্রত্যুত্তর দেওয়া হবে। এটা বড়দিনের কার্ড বিনিময়ের মতো নয়। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সব বিষয় সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং সেই প্রক্রিয়াকে ক্রমান্বয়ে ঘটতে দিন। আমরা বাংলাদেশের সাথে কাজ করব, তথ্যটা বাংলাদেশ থেকেই এসেছিল।
উল্লেখ্য, হাজার কোটি টাকা পাচার করে দুই বছর আগে পালিয়ে যাওয়া পি কে হালদারকে গত শনিবার পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এরপর তার বিরুদ্ধে ভুয়া নাম ব্যবহার করে ভারতের আধার কার্ডসহ নাগরিকত্বের নানা নথি তৈরির অভিযোগ আসে দেশটির সংবাদ মাধ্যমে। আর্থিক দুর্নীতি নিয়েও বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি।
ভারতে গ্রেপ্তার পি কে হালদার এখন সেখানকার তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে রয়েছেন। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে দুদকের ৩৪টি মামলা রয়েছে।