পিপিপিতে প্রথম প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সিডিএ

107

এম এ হোসাইন

সাগর পাড়ে স্মার্ট সিটি আবাসিক এলাকা, ডেভেলপমেন্ট অব ফতেয়াবাদ নিউ টাউন ইন চট্টগ্রাম, রেসিডেন্সিয়াল এরিয়া ফর নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশি অ্যাট কুলগাঁওসহ আরও একাধিক আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)। পাশাপাশি বেশকিছু ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নেরও কথা ছিল। আদৌ এসব প্রকল্প আলোর মুখ দেখবে কিনা সেটা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
যদিও এরমধ্যে ডেভেলপমেন্ট অব ফতেয়াবাদ নিউ টাউন ইন চট্টগ্রাম প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করেছে সিডিএ। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হলে পাবলিক-পাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চায় সিডিএ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পিপিপিতে সিডিএ’র প্রথম প্রকল্প হবে এটি।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ফতেয়াবাদে প্রকল্পের সম্ভ্যবতা যাচাই কাজ চলমান আছে। কাজ শেষ হলে আমরা ডিপিপি তৈরি করবো। এটা অনেক বড় প্রকল্প হবে। তাছাড়া পিপিপির অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। কনসালটেন্ট সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ চলমান রেখেছে। পিপিপির অধীনে এটি আমাদের প্রথম প্রকল্প হবে।
উপশহর স্থাপনের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ফতেয়াবাদ নিউ টাউন প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখে সিডিএ। প্রকল্পের মধ্যে পরিকল্পিত ডিপ্লোমেটিক এনক্লেইব, এডুকেশন ও হেলথ রিসোর্ট জোন, কনভেনশন সেন্টার, শিল্প ও সংস্কৃৃতি জাদুঘর এসব রাখার চিন্তা করা হয়। প্রকল্প এলাকা নির্ধারণে পাহাড় সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক এবং পরিবেশগত বৈশিষ্ট অক্ষুন্ন রাখার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে অকৃষি উঁচু জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ৫ লাখ লোকের আবাসনের ব্যবস্থা হবে। প্রায় ৪ হাজার ৭০০ একর এলাকা নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে হাত দিতে চায় সিডিএ। সিডিএ’র প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে স্থানীয় বাসন্দিারা। কঠোর কর্মসূচির ভয়ও দেখিয়েছেন তারা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সভা ও বৈঠক করে স্থানীয়রা আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানান দেয়।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে কোন আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনি সিডিএ। ফলে নগরবাসীর আবাসন সমস্যা থেকেই গেছে। অনন্যা আবাসিক এলাকা ছিল সিডিএর বাস্তবায়ন হওয়া সর্বশেষ আবাসন প্রকল্প। ২০০৮ সালে প্লট বরাদ্দের পর থেকে একাধিক প্রকল্প নেয়া হলেও আর কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৬ সালে ‘অনন্যা আবাসিক (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের অনুমোদন পায়। সেই ধারাবাহিকতায় নগরীর পাঁচলাইশ, কুয়াইশ ও বাথুয়া মৌজার ৪১৮ দশমিক ৭৩ একর জমির ওপর এ আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। বিশাল এ আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সিডিএ। পাঁচলাইশ ও কুয়াইশ মৌজার জমির মূল্য বেশি হওয়ায় প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যায়। এ কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার উদ্যোগ নেয় সিডিএ। এমনিকে সিডিএর বোর্ড সভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইসলামী ব্যাংক থেকে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে প্রকল্প বাস্তবায়নের এলাকা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্প ব্যয় কমানো, ব্যাংক ঋণ এড়ানোর জন্য হাটহাজারীর বাথুয়া ও শিকারপুর এলাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এরপর আর আগায়নি প্রকল্পটি।