পিতাকে মৃত দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ!

10

চকরিয়া প্রতিনিধি

চকরিয়ায় জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে এতিমখানার নামে কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের পক্ষে মো. কালুর ছেলে আবদুল খালেক বাদি হয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে হেফজখানা ও এতিমখানার পরিচালক মৌওলানা আহসান হাবিব পারভেজ, প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম কাজল এমইউপি ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিমকে বিবাদী করা হয়েছে।
এদিকে অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান সুরাজপুর ভিলেজার পাড়াস্থ ইসলামীয়া হেফজখানা ও এতিমখানায় সরেজমিনে তদন্তে গেলে অভিযোগের সত্যতা পান বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গত ২০০৫ সালে পাঁচজন স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির উদ্যোগে তাদের নিজস্ব অর্থায়নে সুরাজপুরের ভিলেজার পাড়ায় ইসলামীয়া হেফজখানা ও এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধিত (নিবন্ধন নং: কক্স ৪৩৭/১৪ ) হয়। পরে হেফজখানায় পড়ুয়া ৬৪ জন ছাত্রদের এতিমখানার ছাত্র দেখিয়ে এবং তাদের পিতা-মাতা জীবিত থাকার পরও মৃত দেখিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে মৃত্যুসনদ নেয়া হয়। ওই সনদ দেখিয়েই গত ৭ বছর ধরে সরকারি ক্যাপিটেশনের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ইতিপূর্বেও বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে দুর্নীতির রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান।
বিষয়টি নিয়ে সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, পরিষদের প্যাডে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে একটি চক্র মৃত্যুসনদ নেয়ার কাজটি করেছে। এ স্বাক্ষর জালকারীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির তদন্তনাধীন রয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত করা হয়। তদন্তকালে পূর্বের তালিকার ক্যাপিটেশন পাওয়া ৬৪ জনের মধ্যে একজন এতিম ছাত্রেরও উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তাছাড়া তদন্তকালে উপস্থিত ৮৬ জন ছাত্রের মধ্যে যাদেরকে এতিম দেখানো হয়েছে তাদের অভিভাবকরাও (পিতা) উপস্থিত হয়ে তাদের সন্তনরা এতিম নয় মর্মে প্রতিবাদ করেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান ইউএনও জেপি দেওয়ান।