পিকনিকে যাচ্ছিল কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

23

হাটহাজারী প্রতিনিধি

গতকাল দিনটি ছিল শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন। প্রতিদিনের পড়াশুনার চাপ থেকে ক্ষণিকের মুক্তি পেতে শিক্ষকের সঙ্গে পাহাড়ি ঝর্ণা দেখে ফেরার পথে ঝরে গেল তরতাজা ১১টি প্রাণ। নিমিষেই পাল্টে গেল জীবনের সব হিসাব-নিকাশ। সকালের ফ্রেমবন্দী তরতাজা যুবকেরা দুপুর গড়াতেই হয়ে গেলেন কফিনবন্দী।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের এক কিলোমিটার এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসে থাকা ১১ তরুণের মৃত্যু নাড়া দিয়েছে সবার হৃদপিন্ডকে। নিহত সবাই ছিলেন হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের আমান বাজারের পূর্বে আর অ্যান্ড জে প্রাইভেট নামে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।
সকাল ৭ টার দিকে মোস্তফা মাসুদ রাকিব, জিয়াউল হক সজীব, রিদোয়ান চৌধুরী ও ওয়াহিদুল আলম জিসান নামের চার শিক্ষক ও ছাত্রসহ ১৬ জন ২০২২ সালের এসএসসির শিক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে মাইক্রোবাসে চড়ে গিয়েছিলেন মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝর্ণায়। তাদের সাথে উচ্চ মাধ্যমিকের কয়েকজন শিক্ষার্থীও ছিল সেই ভ্রমণে। সেখান থেকে ফেরার পথে গতকাল শুক্রবার বেলা সোয়া ১ টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
সব সম্ভব করার বয়সটি সবে পার করছিলেন তারা। মা-বাবাকে ছেড়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে বাঁধভাঙা আনন্দ করার শখ ছিল তাদের চোখেমুখে। ছিল এক সময় সত্যি সত্যিই বিশ্বজয়ের আকাঙ্খা। সেই আনন্দেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে সকালে ভ্রমণে বের হওয়ার আগে ফ্রেমবন্দী হওয়ার গ্রুপ ছবিটিতে। কিন্তু দুপুর গড়াতেই সেই ১১ তরুণ হয়ে গেলেন চির বিদায়ের প্রতীক কফিনে বন্দী।
বিশ্ব জয় করে মা-বাবার কষ্টমাখা মুখে হাসি ফোটানো আর হবে না তাদের। হাজারো স্বপ্নের ইতি ঘটেছে ট্রেনের ধাক্কায়। সেই গাদাগাদি করে বসা মাইক্রোবাসের ভেতর শেষ মুহূর্তে বন্ধু আর শিক্ষকদের সঙ্গী করেই একসঙ্গে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তারা।