পাহাড় কাটায় সিডিএ’কে ১০ কোটি টাকা জরিমানা

171

রাস্তা নির্মাণে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনের চেয়ে বেশি পাহাড় কাটায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (চউক) ১০ কোটি টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছে। ঢাকায় অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে গতকাল বুধবার শুনানি শেষে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার ৫৫৩ টাকা জরিমানা নির্ধারণ করেন মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসী।
পাহাড় কেটে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, পাহাড়ের উপরিভাগের মাটি এবং ভূমির বাইন্ডি ক্যাপাসিটি নষ্টসহ পরিবেশ-প্রতিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করায় এই জরিমানা করা হয় বলে অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ঢাকা ট্রাংক রোড থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত একটি লিংক রোড করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ২৫ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল ইসলাম প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে অনুমোদনের বাইরে পাহাড় কাটার প্রমাণ পান। ওইদিন তিনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ঢাকায় শুনানিতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। খবর বিডিনিউজের
অধিপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, রাস্তা নির্মাণের জন অনুমোদনের বাইরে বেশি পাহাড় কাটার প্রমাণ পাওয়ায় তাদেরকে ঢাকায় ডাকা হয়েছিল। সেই তলবের ভিত্তিতেই বুধবার শুনানি শেষে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসী বলেন, সিডিএ (চউক) পাহাড় কেটে রাস্তা করছে। এজন্য ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার ৫৫৩ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রকল্প প্রস্তাবনায় যত ঘনফুট পাহাড় কাটার অনুমোদন তারা নিয়েছিল বাস্তবে তার থেকে ৬৯ হাজার ২১৯ দশমিক ৭০২ বর্গফুট বেশি কেটেছে। যে এঙ্গেলে কাটার কথা ছিল সেভাবে না কেটে ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে খাড়াভাবে কেটেছে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে পাহাড় ধসে মানুষের জীবনহানি ঘটতে পারে। ২০১৭ সাল থেকেই তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছিল। আগেও তাদেরকে সতর্ক করে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়েছিল। তারপরেও তারা থামেনি। এখন প্রকল্প প্রায় শেষের দিকে।
জরিমানার অর্থ পরিশোধের বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা ১৫ দিন সময় চেয়েছে, আমরা সময় দিয়েছি। সিডিএ এবং বিশেষ করে এর প্রকল্প পরিচালককে জরিমানা দিতে বলা হয়েছে। তারা এখন কোন খাত থেকে দেবে সেটা তাদের বিষয়।
অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেই ক্রাইটেরিয়া রক্ষা করে পাহাড় কাটতে বলেছিলেন তারা সেটা মানেনি। ফলে মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মী হিসেবে তাদের নিবৃত্ত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
এদিকে ওই লিংক রোড প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক চউকের প্রকৌশলী রাজীব দাস বলেন, প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের শর্ত প্রতিপালন করব। তবে শুনানিতে একচেটিয়াভাবে আমাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল করব।