পাহাড়ের অশান্তিকে ঘিরে সারাদেশ অশান্ত হচ্ছে

16

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রক্রিয়া আমরা শুরু করতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমি উদ্বিগ্ন। এই পাহাড় এখন অশান্ত। শুধু তা নয় পাহাড়ের অশান্তিকে ঘিরে চট্টগ্রাম ও সারাদেশে অশান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, গত কয়েকমাস ধরে ওই পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে জঙ্গি-মৌলবাদীরা সেখানে সশস্ত্র ট্রেনিং নিচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর জন্য। তাদের টার্গেট ছিল কাশিমপুর জেল। কারণ সেখানে জঙ্গিরা রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চত্বরে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’র আয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সংহতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সম্মিলিত বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলুন ¯েøাগানে এই সমাবেশ হয়। সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, পাহাড়ি-বাঙালি মিলে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করা হবে। আশা ছিল এই চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদাহরণ সৃষ্টি করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তা হয়নি। বহুবার সরকারের কাছে আবেদন করেছি। পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন প্রণয়ন করতে যতবার পার্লামেন্ট থেকে আমরা বক্তব্য দিয়েছি ততবার আমলাদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা হাজির করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল ভূমি কমিশন আইন করতে। ৩০ হাজার আবেদন পড়েছে ভূমি কমিশনে, একটিও নিষ্পত্তি করা হয়নি। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, চুক্তিটা হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও ভূমি অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এগুলো সমাধান না করে, শুধু লোক দেখানো কয়েকটি পদে তাদের বসিয়ে দিলে সমাধান হবে না। মূলধারার জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ, সমর্থন, সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সহজে হবে না। দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো এ প্রশ্নে নীরব। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে নতুন জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে। পাহাড়ে শুধু পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের বিষয় ছিল। অথচ সেখানে এখন জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী, যাদের বিভিন্ন এজেন্ডা আছে, তাদের উপস্থিতিও দেখছি।
ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সাবেক সদস্য অধ্যাপক রণজিৎ দে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য সৌখিন চাকমা, জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা জসিম উদ্দিন বাবুল, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্মসমন্বয়কারী জাকির হোসেন, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঐক্য ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন রশিদ ভুঁইয়া, ন্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুল দাশগুপ্ত প্রমুখ।