পাহাড়ি ঢলে দুইদিন ধরে বিচ্ছিন্ন বান্দরবান

36

টানা বর্ষণে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের বড় দুয়ারা এলাকার প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল বুধবারও সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল বান্দরবান। ভারী বর্ষণ ও উজানের পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে এই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন আটকা পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। সড়কের দু’পাশে ট্রাক, সিএনজি, মালবাহী কাভার্ড ভ্যানসহ যানবাহন আটকে ছিল গতকালও। নৌকায় পারাপার হয়ে বান্দরবান ও চট্টগ্রামগামী লোকজন চলাচল করছেন কোনোরকমে। অনেকে পানি পার হচ্ছেন ভ্যানে-রিকশায় চড়ে। বুধবারও বান্দরবানে গুঁড়ি গুঁড়ি এবং কখনো কখনো ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। জেলার লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদমের নিম্নাঞ্চলের এলাকাসমূহে জমে থাকা পানি সরেনি গতকালও। তবে গতকাল এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলার কোথাও বড় ধরনের পাহাড় ধস বা দুর্ঘটনা ঘটেনি। বন্যার পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে।
বান্দরবান পূর্বানী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দাশ ঝন্টু জানান, বান্দরবান-কেরানিহাট সড়কের বাজালিয়ায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় তারা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। পানি নেমে গেলে বাস চালু করা হবে। এর আগে গত সোমবার পাহাড় ধসের কারণে বান্দরবানের সাথে রুমা ও থানচির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাসদস্যদের তৎপরতায় সড়ক যোগাযোগ চালু হয়। শুক্রবার থেকে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় থানচি ভ্রমণে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
চলতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে মাঠে নেমেছে জেলা ও পৌর প্রশাসন। প্রতিদিন পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। লামা ও বান্দরবান সদরে গতকাল দিনভর অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। এ সময় রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে। পুরো জেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে ১২৬ টি। সোমবার রাত থেকে আশ্রয় নেয়া মানুষদের জন্য শুকনো খাবার বিতরণ করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম।