পাল্টে যাচ্ছে নগরীর চিত্র কমছে মানুষের চলাচল

28

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়ায় নগরীর দৃশ্য পাল্টে গেছে। নগরীর সর্বত্র ‘ঘরবন্দি’ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কমে গেছে অলিগলিতে জনসমাগম। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর লোকজন তেমন একটা থাকে না। আড্ডাও চোখে পড়ে না। দোকান পাটও বন্ধ।
এদিকে পুলিশ ও সেনাবাহনী টহল জোরদার করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত অহেতুক বের হলে জরিমানা করছে। গাড়িও ফিরিয়ে দিচ্ছে। শহর থেকে লোকজন বের হচ্ছে কম, ঢুকছেও সীমিতত সংখ্যক।
জানা যায়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরবর্তীতে সেই ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
সরকার ছুটি চলাকালে জনসাধারণকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিলেও সেটা তেমন একটা কার্যকর হয়নি। প্রধান প্রধান সড়কে লোকজন কম থাকলেও অলিগলিতে ছিল মানুষ আর মানুষ। অধিকাংশ দোকানপাটই খোলা ছিল। পাড়ায় পাড়ায়, দোকানে ছিল আড্ডা। শত শত লোক রাস্তায় দেখা যায়। সামাজিক দূরত্ব মানছিল না অনেকে। পুলিশ, সেনাবাহিনীও সামাল দিতে পারছিল না।
সোমবারই সিএমপির পক্ষ থেকে নগরীতে সেবা খাত ছাড়া অন্যদের নগরীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এটি এক প্রকার লকডাউন বলে সকলের ধারণা। সোমবার রাত থেকে কঠোর অবস্থানে যায় সেনা ও পুলিশ। টহল জোরদার করে। মঙ্গলবার ও বুধবার একই অবস্থা দেখা যায়। মঙ্গলবার দিনে একাধিক স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। বুধবারও তা অব্যাহত থাকে।
নগরীর নালাপাড়া, পাথরঘাটা, চকবাজার, রাজাপুর লেন, মোলভীপাড়া, মুন্সীপাড়া, বড়পুল, হেমসেন লেন, আসকাদিঘির পাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, লোকজন আগের তুলনায় অনেক কম। লোকজন ঘরবন্দি হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। দোকানপাটও বেশিরভাগ বন্ধ।
মূল সড়কে লোকজন কম থাকলেও অলিগলিতে ছির আড্ডা। কিন্তু গত দু’দিন ধরে সে রকম আড্ডা আর দেখা যাচ্ছে না। দিনে কিছুটা থাকলেও সন্ধ্যার পর নিরব হয়ে যায় পুরো শহর।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, অতি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। কেউ বের হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন শৃংখলা বাহিনী মাঠে রয়েছে। তারা এ লক্ষ্য কাজ করছে। অলিগলিতেও পুলিশ টহল দিচ্ছে।
দেখা যায়, মূলসড়কে লোকজন প্রায় নাই। কেউ কোন প্রয়োজনে আসলেও তারা কিছুক্ষণ পরই চলে যাচ্ছে। পুরো রাস্তাঘাট ফাঁকা। বিকাল তিনটার পর ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকান বন্ধ। রিকশার সংখ্যাও কম। যানবাহন চলাচল খুবই সীমিত।
সন্ধ্যার পর মূলসড়কসহ অলিগলি ভূতুরে অবস্থায় পরিণত হয়েছে। অলিগলিতে দু’চারজন লোক দেখা গেলেও পুলিশী টহল টের পাওয়ার সাথে সাথেই বাসায় ঢুকে যায়।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, লোকজনকে ঘরে রাখতে পুলিশ কাজ করছে। অলিগলিতেও টহল দিচ্ছে। কাউকে অহেতুক ঘোরাফেরা করতে দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে কোন ছাড় নাই।
নগরীর পাঁচ প্রবেশ মুখ সিটি গেট, অলংকার, অক্সিজেন মোড়, শাহ আমানত সেতু ও বহদ্দারহাট টার্মিনাল এলাকায় ট্রাফিক বিভাগ ও পুলিশ চেক পোস্ট বসিয়েছে। সঙ্গত কারণ ছাড়া কাউকেউ নগরীতে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। আবার কাউকে নগরীর বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
প্রবেশমুখ ছাড়াও নগরীর ১৭টি গুরুত্বস্থানে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। যান চলাচল করার সময় পুলিশ থামিয়ে কারণ জানতে চায়। সঙ্গত কারণ দেখাতে না পারলে গাড়ির ফিরিয়ে দিচ্ছে। সামনের দিকে যেতে দিচ্ছে না।