পাল্টা অবস্থানে কাহিল সুরক্ষা পরিষদ

45

নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্ধিত গৃহকর প্রত্যাহারের দাবিতে নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি শেষ হয়েছে স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে। গতকাল সকাল ১১টায় কদমতলী মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়ে টাইগারপাস মোড়ে এসে পুলিশের বাধায় থমকে যায়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে পুলিশের সম্মতিতে চারজনের প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি হস্তান্তর করে। সকাল থেকে কদমতলী মোড়, টাইগারপাস ও চসিকের প্রবেশমুখে কড়া নিরাপত্তায় ছিলো নগর পুলিশ। অন্যদিকে মেয়রের পক্ষে চট্টগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজ সংগঠনের ব্যানারে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চসিকের দুই প্রবেশমুখ ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
পুলিশের অনুমতিতে করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মালেক, সহ-সভাপতি মো. ইসমাইল মনু, সহ সাধারণ সম্পাদক জন্নাতুল ফেরদৌস লিপি এবং মুখপাত্র কাজী শহিদুল হক স্বপন টাইগারপাস থেকে চসিক কার্যালয়ে গিয়ে প্রধান নির্বাহীকে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। সংগঠনটির সভাপতি নুরুল আবছার উপস্থিত থাকলেও তাকে পুলিশ যেতে দেয়নি। এ ছাড়া সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আমির উদ্দীনকে কর্মসূচিতে দেখা যায়নি।
স্মারকলিপিতে মূলত চারটি দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো, বাড়ি ভাড়া ভিত্তিতে নির্ধারিত বর্তমান এসেসমেন্ট বাতিল করা, আগের নিয়মে আয়তনের ভিত্তিতে নতুনভাবে এসেসমেন্ট করা, আপিল আবেদনের নামে ঘুষ-বাণিজ্যের সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দ্রুত বিচার এবং নাগরিক সেবা বৃদ্ধি ও দুর্নীতি রোধে প্রতিবছর প্রকাশ্যে ‘গণশুনানির’ আয়োজন করা।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের উপস্থিতে প্রতিনিধি দলকে বলেন, ‘ঘেরাও কর্মসূচি দিয়ে আসতে হয় না। মেয়র স্যারের দরজা সবসময় খোলা থাকে। ঘুষ-বাণিজ্যের বিষয়টি আমি নিজে দেখবো। এসেসমেন্ট বাতিল করার এখতিয়ার সিটি করপোরেশনের নেই। তবে গণশুনানি করার বিষয়ে আমি মেয়র মহোদয়ের সাথে কথা বলব।’
টাইগারপাস মোড়ে করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছার বলেন, ‘মেয়র পুলিশ দিয়ে বাধা দিয়েছেন। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। মেয়রের দূরদৃষ্টির অভাব রয়েছে। নয়তো আজকে হলেও উনি আমাদের ডেকে কথা বলতেন।’ মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর অনুসারীরা সিটি করপোরেশন ভবন ঘেরাও করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা পূর্বদেশকে বলেন, ‘নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কাউকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি। পরে তাদের একটি প্রতিনিধি দল মেয়রকে স্মারকলিপি দিয়েছেন।’
সকাল ১১টা ২০ মিনিটে নগরের কদমতলীর আবুল খায়ের মার্কেট চত্বর থেকে মিছিল বের করে করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। মিছিলটি কদমতলী মোড়, দেওয়ানহাট হয়ে দুপুর ১২টার দিকে টাইগারপাস মোড়ে আসে। এর আগে ঘেরাও কর্মসূচিতে আতঙ্কিত হয়ে সকাল ৯টার দিকে নগর ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। ফলে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কেউ নগর ভবনে ঢুকতে পারেননি। এতে বিপাকে পড়েন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জানা গেছে, সকাল ৯টায় নগর ভবনের ফটকে তালা দেন সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ। ফলে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ঢুকতে পারেননি। কর্মচারীরা টাইগারপাস সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে সাড়ে ১০টার দিকে ফটক খুলে দেওয়া হয়।