পাপিয়ার টাকাকড়ির খোঁজে ব্যাংকগুলোকে দুদকের চিঠি

33

যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেতা শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমনের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং দেশি-বিদেশি ৫৯টি ব্যাংকে গতকাল রবিবার এই চিঠি পাঠানো হয়।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেছেন, ‘বিদেশে এই দম্পতির বাড়ি ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য জানতে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াতেও চিঠি পাঠানো হয়েছে’।
দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজের সই করা পৃথক চিঠিগুলো ব্যাংকগুলোর এমডি ও বিএফআইইউ প্রধানের কাছে পাঠানো হয়। পাপিয়া ও তার স্বামীর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পাওয়া কর্মকর্তা মমতাজ এর আগে গত ২ মার্চ হোটেল ওয়েস্টিন ও রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ডোম-ইনোকে চিঠি দিয়েছিলেন।
ওই চিঠিতে হোটেল ওয়েস্টিন থাকা ও খাওয়ার বিলের কপি, বিভিন্ন সময় হোটেল বুকিংয়ের নথিপত্র ও কার কার নামে রুম বুকিং করা হয়েছে, সেসব বিষয় সংশ্লিষ্ট নথিপত্র চাওয়া হয়। ৮ মার্চের মধ্যে তথ্য জানাতে বলা হলেও নথিপত্র এখনও দুদকে পৌঁছায়নি বলে গতকাল রবিবার সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
পাপিয়া পাঁচ তারা হোটেল ওয়েস্টিনের ব্যয়বহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট মাসের পর মাস ভাড়া রেখে ‘যৌনসেবার কারবার’ চালাতেন বলে তাকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানায়। গত ২২ ফেব্রূয়ারি গ্রেপ্তার পাপিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়েছে, তার বিবরণ অনুযায়ী মোট ৫১ দিন ওই কক্ষ ছিলেন পাপিয়া, আর এ জন্য বিল মিটিয়েছেন ৮১ লাখ ৪২ হাজার ৮৮৭ টাকা। আর এই হোটেলে এই সময়ের জন্য অবস্থানকালে বার ব্যবহারের জন্য ব্যয় করেছেন ১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতিদিন হোটেল বেয়ারাদের টিপস দিতেন ৮-১০ হাজার টাকা।
র‌্যাব-১ অধিনায়ক শাফী উল্লাহ বুলবুল সেদিন বলেছিলেন, ‘সুনির্দিষ্ট পেশা না থাকলেও তারা (পাপিয়া-সুমন) স্বল্প সময়ে বিশাল সম্পত্তি ও অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন। এই বিশাল অর্থের প্রকৃত উৎস জানতে চাওয়া হলে সন্তোষজনক কোনো জবাব তারা দিতে পারেননি’। খবর বিডিনিউজের
ঢাকার ইন্দিরা রোডে ওই দম্পতির দু’টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, নরসিংদী শহরের দু’টি ফ্ল্যাট, গাড়ি, নরসিংদীর বাগদী এলাকায় কোটি টাকা মূল্যের দুটি প্লটের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব। এছাড়া তেজগাঁও এফডিসি গেইট সংলগ্ন এলাকায় ‘কার এক্সচেঞ্জ’ নামে একটি গাড়ির দোকানে প্রায় ১ কোটি টাকা এবং ‘কেএমসি কার ওয়াশ অ্যান্ড অটো সলিউশনস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে তাদের।
দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ওই দম্পতির বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা থাকার তথ্য মেলার কথাও জানিয়েছিল র‌্যাব।