পাচার হচ্ছে বর্জ্য তুলা

21

 

রিসাইকেল ফাইবার বা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য সুতায় উৎপাদিত বস্ত্র ও পোশাকের চাহিদা বাড়ছে বিশ্ববাজারে। এ ধরনের বস্ত্র ও পোশাক উৎপাদনে ব্যবহৃত সুতার প্রধান কাঁচামাল ব্যবহূত তুলার বর্জ্য। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সংগ্রহ করা এই বর্জ্য ব্যবহারে রিসাইকেল ফাইবারের মিলগুলো বছরে ২৪ লাখ টন সুতা উৎপাদন করে থাকে। এতে ১০০ কোটি ডলারের আমদানি সাশ্রয় হচ্ছে। এতে পানির ব্যবহার কম। কার্বন নিঃসারণও কম হয়। ফলে পরিবেশ সহায়ক রিসাইকেল ফাইবারে বড় সম্ভাবনা দেখছে দেশের বস্ত্র ও পোশাক খাত। তবে সা¤প্রতিক সময়ে মিথ্যা ঘোষণায় পাচার হয়ে যাচ্ছে রিসাইকেল ফাইবারের কাঁচামাল বর্জ্য তুলা। চীন ও ভারত এই পাচারের প্রধান দুই গন্তব্য। এতে প্রয়োজনীয় বর্জ্য তুলার সংকট এখন চরম। সহজলভ্য না হওয়ায় তুলা বর্জ্যরে দাম গত ছয় মাসে বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় দুর্বল হচ্ছে দেশের বস্ত্র ও পোশাক খাত। জানা গেছে, তুলার বর্জ্য রপ্তানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য রয়েছে। তবে সুতার বর্জ্য রপ্তানিতে কোনো ধরনের শুল্ক বাধা নেই। এ সুযোগে কিছু অসাধু রপ্তানিকারক মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে সুতার বর্জ্য নামে তুলার বর্জ্য রপ্তানি করছে। অন্যদিকে মিথ্যা ঘোষণায় রপ্তানির কারণে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা ঘটছে।
পাচার রোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হস্তক্ষেপ চেয়েছে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। গত সপ্তাহে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের বরাবরে পাঠানো চিঠিতে তুলার বর্জ্যসহ সব ধরনের গার্মেন্টস বর্জ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। তুলা বর্জ্যরে অভাবে রিসাইকেলিং শিল্পে উৎপাদন সংকটের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। স্কয়ার টেক্সটাইল, আরবিডি ফাইবারসহ কয়েকটি সদস্য মিলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআরে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।
রিসাইকেল ফেব্রিক্স হচ্ছে তুলার বর্জ্য এবং পুরোনো কাপড়কে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন সুতা এবং সেই সুতায় কাপড় তৈরি করা। সাধারণ ডেনিমের পাশাপাশি মূল্য সংযোজিত দামি স্যুট, জ্যাকেট তৈরি হয় রিসাইকেল ফেব্রিক্সে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিমানের বডি তৈরিতেও রিসাইকেল ফেব্রিক্সের ব্যবহার রয়েছে। দেশে ২০টি রিসাইকেল ফাইবারের স্পিনিং মিল রয়েছে।