পাঁচলাইশ থানার এসআইকে তলব হাইকোর্টে

35

চাকরি দেয়ার নাম করে প্রলোভনে ফেলে বাসায় এনে জোরপূর্বক দেহব্যবসায় বাধ্য করার ঘটনায় দুই নারীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার বদলে মানবপাচার আইনে মামলা করায় এজাহার দায়েরকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। ওই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন, নগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাছুম রহমান। আগামী ২৫ ফেব্রূয়ারি আদালতে তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার মানবপাচার আইনে হাসিনা বেগম ও পলি আক্তার নামে দুই নারী আসামির পক্ষে জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে দুই নারী আসামির জামিন না দিয়ে জামিন প্রশ্নে রুলও জারি করা হয়েছে।
আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করে শুনানিতে অংশ নেয়া রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ জানান, পাঁচলাইশ মডেল থানার আওতাধীন মোহাম্মদপুর এলাকার আবেদ মঞ্জিলের তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে হাসিনা বেগম ও পলি আক্তার নামে দু’জন দেহব্যবসা শুরু করেন। তারা পোশাক কারখানার নিরীহ শ্রমিকদের বেশি বেতনের লোভনীয় চাকরি দেয়ার প্রলোভনে ফেলে বাসায় নিয়ে আসার পর পতিতাবৃত্তিতে উদ্বুদ্ধ করেন এবং অনেককে জোরপূর্বক দেহব্যবসায় বাধ্য করেন। ঘটনাটি নজরে আসলে গত বছরের ৭ নভেম্বর পাঁচলাইশ থানা পুলিশের এসআই মাছুম রহমানের নেতৃত্বে একটি দল ওই বাসায় অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশ ভুক্তভোগী হিসেবে যাদেরকে ওই বাসায় আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছিল, তাদেরকে উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পলি আক্তার ও হাসিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর অভিযান পরিচালনাকারী এসআই কাজী মাছুম রহমান দু’জনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ মডেল থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ বলেন, ওই মামলায় আসামিদের জামিন চেয়ে করা আবেদনের ওপর দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানিকালে এক অপরাধের অভিযোগে অন্য আইনে মামলা দায়ের করার বিষয়টি নজরে আনা হলে আদালত এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এজাহারে বর্ণিত ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৫ ধারায় করা উচিত হলেও পুলিশ কর্মকর্তা সেটি মানবপাচার আইনে দায়ের করেছেন। এ কারণে আদালত এজাহার দায়েরকারী পাঁচলাইশ থানা পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তলব করে আদেশ দেন। তাকে পরবর্তী ধার্য তারিখে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আদালতে আসামিদের পক্ষে এডভোকেট অশোক কুমার বণিক শুনানিতে অংশ নেন।