পল্টন-সোহরাওয়ার্দীর উত্তাপের মধ্যে আলোচনায় খালেদা

29

ঢাকা প্রতিনিধি

দেশের রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে ‘১০ ডিসেম্বর’। এদিনটিকে ঘিরে সব আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে বিএনপির সমাবেশের ভেন্যু। বিএনপি এদিন ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায় নয়াপল্টনে। এতে ১০ লাখ লোক জমায়েত করার ঘোষণা দেন দলটির নেতারা। তবে নয়াপল্টন নয়, ২৬টি শর্তে বিএনপিকে গণসমাবেশ করার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লিখিত অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শোনা যাচ্ছে অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে। গুঞ্জন উঠেছে, ঢাকায় আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির গণসমাবেশে তিনি যোগ দেবেন। তবে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেছেন, শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্ত থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়া যদি দলের সমাবেশে যোগ দেন তা হলে আদালত ব্যবস্থা নেবেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে গত ১৩ নভেম্বর নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হলেও তা নাকচ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লিখিত অনুমতি দেয় সরকার। পুলিশের অনুমতিপত্রে বলা হয়েছে: বিএনপির কার্যালয়ের বিপরীতে গণ-সমাবেশ করলে যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। এ কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শর্তসাপেক্ষে আগামী ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো।
ডিএমপির পক্ষে পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া গত মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে এই অনুমতিপত্র বিএনপি কার্যালয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল করির রিজভীর কাছে পৌঁছে দেন। এসময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে। সরকার কখনো অনুমতি দেয়, কখনো দেয় না, অনেক সময় অনুমতি দিলেও আক্রমণ করে। আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বাধা-বিপত্তি আসলেও কর্মসূচি চলবে। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য আবেদন করিনি। বিএনপি নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে চায়।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিভাগীয় শেষ সমাবেশ হবে ঢাকায়। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, নয়াপল্টনেই ১০ তারিখে সমাবেশ করব। সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, ডিএমপি কমিশনারসহ সবাইকে, কোনো ঝামেলা না করে এ সমাবেশ যাতে করতে পারি, এ ব্যবস্থা আপনারা করবেন।
অপরদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া বড় সমাবেশ সম্ভব নয়। সরকার সেখানে ভালো মনে করেই দিয়েছে। সরকার কারও কথা শুনতে বাধ্য নয়। তাছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেন্যু বিএনপিই চেয়েছে। ডিএমপি কমিশনার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই উপযুক্ত মনে করেছেন। স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে দুরভিসন্ধি বা বিশৃঙ্খলার ‘প্রশ্নই আসে না’। সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা দলটিকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে ভুল করবে। বিশৃঙ্খলা করলে বরদাস্ত করবে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি, আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে যেসব কার্যক্রম করতে চান তা অবশ্যই করবেন। এটা রাজনৈতিক অধিকার। তবে কোনোক্রমেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবেন না এবং করার চেষ্টাও করবেন না। কারণ বাংলাদেশ একটা পর্যায়ে চলে গেছে, এগিয়ে গেছে।
মঙ্গলবার নেত্রকোনা জেলা ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীর আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালালে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা হামলা করা হবে।