পর্যায়ক্রমে বিজেএমসির সকল বন্ধ মিল চালু করা হবে

13

নিজস্ব প্রতিবেদক

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক এমপি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর হাওয়াই চপ্পলের কারখানা শুরু করেছিলাম। তখন বিদেশ থেকে রাবার আমদানি হতো। বাজার থেকে খুচরা দরে হাফ টন, পাঁচ পিস, দুই পিস করে রাবার কিনে এনে চালিয়ে নিতাম। এরপরে বন শিল্প উন্নয়ন সংস্থা রাবার বিক্রি শুরু করলে আমরা সাড়ে ৮ টাকা কেজি দরে টেন্ডার করে কিনতাম। এভাবে আমাদের যাত্রা শুরু হয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘একসময় ভারত ও চায়না নির্ভর হতে হলেও এখন দেশীয় রাবার দিয়ে টায়ারসহ রাবারের অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। যখন দেশে রাবারের কোন চাষ হতো না, তখন একটা সাইকেল বা রিকশার টায়ার টিউবের জন্য আমরা ভারত ও চীনমুখী ছিলাম। এখন সে সময় নেই। আমরা দেশীয় রাবারের মাধ্যমে কোয়ালিটি টায়ার টিউব তৈরি করছি। বর্তমানে চায়না ও ভারতের টায়ার দেশে নেই। আমরা নিজেরাই তা তৈরি করে সরবরাহ করছি।’ গতকাল বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে বাংলাদেশ রাবার বোর্ড আয়োজিত ১ম প্রাকৃতিক রাবার ও রাবারভিত্তিক শিল্পপণ্য মেলার সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাবার সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ও রাবার খাতের সংশ্লিষ্ট অংশীজন নিবিড়ভাবে কাজ করলে রাবারের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে। পাশাপাশি দেশীয় প্রাকৃতিক রাবার ব্যবহারে রাবারভিত্তিক শিল্প উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বাড়বে। এছাড়াও শুধু রাবার উৎপাদন করলে হবে না। কোয়ালিটি রাবার তৈরি করতে হবে। একটা গাড়ির টায়ার একমাসও টিকে আবার এক বছরও টিকে। সুতরাং ভাল রাবার তৈরি করা গেলে ভাল সুনাম ও আস্থা অর্জন করা যাবে। রাবার সম্পর্কে আমার ভাল ধারণা আছে। এখন মন্ত্রী হলেও আগে ব্যবসায়ী ছিলাম। রাবার নিয়ে গবেষণা করেছি, বিভিন্ন দেশে ঘুরেছি। বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে একটা মানে এনেছি রাবার শিল্পকে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার রাবার ও রাবারভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও প্রসারে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। জাতীয় অর্থনীতিতে রাবার শিল্পের অবদান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ খাতের উন্নয়ন হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী যেমন উপকৃত হবে, তেমনি বেকার সমস্যা সমাধানে ভূমিকা পালন করবে। রাবার চাষের মাধ্যমে নারী-পুরুষের ব্যাপক কর্মসংস্থান সম্ভব। বাগানের গাছের পরিচর্যা, টেপিং, ল্যাটেক্স হতে রাবার শিট তৈরি করার কাজে ফ্যাক্টরিতে পাহাড়ি-বাঙালি নারী/পুরুষের কর্মসংস্থান হয়।’
তিনি বলেন, ‘সাদা সোনা নামে খ্যাত রাবার গাছ শুধু যে মূল্যবান রাবার উৎপন্ন করে তা নয়। এ গাছগুলো প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্য যেকোন গাছের চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। রাবার চাষ যেমন অর্থনীতি বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে, তেমনি পরিবেশ রক্ষায় সমান অবদান রেখে যাচ্ছে। রাবার বাগান জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণির বিচরণের ক্ষেত্র হিসেবেও ভূমিকা রাখে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মুহাম্মদ হারুন, ওয়েলকাস্ট গ্রæপের চেয়ারম্যান মো. আরিফ হাসনাইন প্রমুখ।