পর্যটককে মারধরের অভিযোগ ট্যুরিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধে

3

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশ করায় পর্যটককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নাজমুল হাসান নামের এক পর্যটক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় অভিযোগ ঘিরে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। যদিও পর্যটককে মারধরের অভিযোগ নিয়ে সর্বত্র ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
নাজমুল হাসান কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালী থানার সুজানগর এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে বলে জানা গেছে।
অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লার কোতোয়ালী থানার সুজানগরের নাজমুল হাসান নামে এক পর্যটক কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে যান। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা বাঁধা দিলে ওই পর্যটকের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা তাকে মারধর করেন। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলে ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের বিষয়টি অফিসিয়ালি ট্যুরিস্ট পুলিশের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হবে।
অভিযোগকারী নাজমুল জানান, গত বুধবার ভাগিনা মো. শান্তকে নিয়ে তিনি কক্সবাজার আসেন। তারা ‘ড্রিম গেস্ট’ নামের এক আবাসিক হোটেলে উঠেন। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫ টায় তারা মোটরসাইকেল নিয়ে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ঘুরতে যান। এ সময় জনৈক ফটোগ্রাফার তাদের জানায়, সৈকতে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশ ও ঘোরাঘুরিতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এরপরই নাজমুল ও তার ভাগিনা মোটরসাইকেলসহ সৈকত এলাকা থেকে ফিরছিলেন। এ সময় নাজমুলের কাছ থেকে হেলমেট এবং ফটোগ্রাফারের ক্যামেরা নিয়ে নেন দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা। এরপর নাজমুল ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেও তাকে ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তা লাঠি দিয়ে মারধর করেন।
এদিকে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে মারধরের সত্যতা মিলেনি। এ বিষয়ে জানতে ভুক্তভোগী পর্যটক নাজমুল হাসানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, আমাদের কাছে কেউ লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেননি। এছাড়া জেলা প্রশাসন থেকেও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। আমরা সংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে তাকে আমাদের অফিসে আনা হয় এবং তিনি কাগজপত্র আনার জন্য ৮টা ৫ মিনিটে এ বেরিয়ে যান। ৮টা ৪৫ মিনিটে তিনি কাগজ নিয়ে আসলে, তা চেক করে ৯টা ১৫ মিনিটে তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য কর্তৃক পর্যটককে মারধরের সত্যতা প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়নি। অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ আছে, যে কেউ দেখতে চাইলে দেখানো যাবে। পর্যটনের স্বার্থে যাচাই-বাছাই করে সত্যটি তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের এ কর্মকর্তা।