পরীমনির স্থায়ী জামিন মিললো

15

পূর্বদেশ ডেস্ক

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনির স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গতকাল রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে পরীমনির আইনজীবী তার স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তার স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে আদালতে যান পরীমনি। মাদকের মামলায় প্রতিবেদন দাখিল হওয়া পর্যন্ত তিনি জামিনে ছিলেন। শুনানিতে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া পর্যন্ত এই মামলায় পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। তিনি জামিনের কোনো অপব্যবহার করেননি। তাই আবার তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হোক।
পরীমনির জামিনের বিরোধিতা করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল্লাহ আবু। তিনি আদালতে বলেন, আগে থেকে এই মামলায় শুনানির জন্য আজকের (রোববার) দিন ধার্য ছিল। সাধারণত সকাল ১০টায় প্রত্যেক আসামির আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আসামি পরীমনি বেলা একটা পর্যন্ত আদালতে হাজির হননি।
আইন সবার জন্য সমান মন্তব্য করে আদালতে পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন, প্রত্যেককে আইন মেনে চলতে হবে। আদালতে সঠিক সময়ে হাজির হতে হবে। আদালতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। পরীমনির কাছ থেকে বিদেশি মদসহ ভয়ংকর রকমের মাদক এলএসডি-আইস পাওয়া গেছে। পরীমনির জামিনের বিরোধিতা করেছেন তিনি।
পিপির বক্তব্যের পর পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা আদালতে বলেন, ‘স্যার, এ রকম ভুল আর হবে না।’
আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলির আদেশ দেন।
গত ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। পরে তাঁকে গুলশান থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযুক্ত অন্য দুজন হলেন, আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন। প্রতিবেদন দাখিলের পর গতকাল তিনি স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন।
গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন। পরদিন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হন এ তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। পরদিন ৫ আগস্ট বিকেল ৫টা ১২ মিনিটে পরীমনি, চলচ্চিত্র প্রযোজক রাজ ও তাদের দুই সহযোগীকে বনানী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় র‌্যাব বাদী হয়ে বনানী থানায় পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। সেই মামলায় পরীমনিকে আদালতে হাজির করলে প্রথমে চারদিনের রিমান্ড এবং পরে আরও দুই দফায় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
অসুস্থ হয়ে এজলাস কক্ষে শুয়ে পড়েন পরীমনি : মাদক মামলায় রোববার হাজিরা দিতে গিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে অসুস্থ হয়ে পড়েন চিত্রনায়িকা পরীমণি। শুনানি শেষে তাকে অসুস্থ অবস্থায় তার গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে আদালতে আসেন পরীমণি। এ সময় ছয়তলা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে হাঁপিয়ে ওঠেন তিনি। শুনানির শেষ পর্যায়ে এজলাসের ভেতরেও শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। পরে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় ভিড় সরিয়ে তাকে গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে মাদক মামলায় পরীমণিকে স্থায়ী জামিন দেন আদালত। তার করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।