‘দেশে জলবায়ু পরিবর্তন ও বাঁধ ভাঙনের ফলে অসময়ে দিন দিন নতুন নতুন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। নদী ভাঙনের ফলে মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়া হচ্ছে এবং শহরে বসবাস বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে, পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি জীবন যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয়তার নিরিখে পরিকল্পনা অনুযায়ী বাঁধ নির্মাণ করে যথাযথভাবে চাহিদা অনুযায়ী স্লুইসগেট নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। বাঁধের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় অধিবাসীদের অসন্তুষ্টি দূর করে তাদের সম্পৃক্ত করা হলে বাঁধের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে’।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত ‘দি লিগ্যাসি অফ পোল্ডার্স: ডাইগনসিস কমপ্লেক্স ফ্লুডিং প্রসেস অ্যান্ড এডাপটেশন অপশন ইন দি কোস্টাল রিজিয়ন অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রমজান আলী প্রামানিক।
এসময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন দেশের উন্নয়ন করতে হলে আগে দেশের পানি ও নদীর উন্নয়ন করতে হবে, সে অনুযায়ী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের উপক‚লীয় বিস্তীর্ণ নদী ভাঙন অঞ্চলের যথাযথ উন্নয়নে সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি দেশে উন্নয়নে উপক‚লীয় বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে সামুদ্রিক লবণাক্ততা সুরক্ষিত করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন।
আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রকৌশলী শিবেন্দ্যু খাস্তগীর। আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এস এম শহিদুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. সরফরাজ গণি আদনান। মূল প্রবন্ধকারের পরিচিতি তুলে ধরেন কারিগরী আলোচনা ও সেমিনার উপ-কমিটির সদস্য-সচিব ড. প্রকৌশলী এএসএম সায়েম।
সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী সুভাষ চক্রবর্তী, স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রের প্রাক্তন ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এমএ রশীদ ও ড. প্রকৌশলী রশীদ আহমেদ চৌধুরী, চুয়েটের অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন আহমেদ।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. মো, সরফরাজ গণি আদনান বলেন, দেশের ভৌগলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন, নদীর গভীরতা ও নাব্যতা কমে যাওয়া, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টির ফলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জ্বলোচ্ছ্বাস হচ্ছে এবং ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তনের ফলে সমাজ ও জনজীবন মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
প্রকৌশলী এমএ রশীদ, প্রকৌশলী সুভাষ চক্রবর্তী, প্রকৌশলী সিয়াম হাসান, প্রকৌশলী নাফিস প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ গ্রহণ করেন। মূল প্রবন্ধকার মোহাম্মদ আমীন প্রকৌশলীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং পরামর্শ সম্পর্কে তাঁর অভিমত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও মূল প্রবন্ধকারকে পুষ্পস্তবক এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীগণসহ কেন্দ্রের বিপুল সংখ্যক প্রকৌশলী সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি