পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৯ অক্টোবর

39

পূর্বদেশ ডেস্ক

হিজরি সনের রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হবে আগামী বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে। এ হিসাবে আগামী ৯ অক্টোবর (১২ রবিউল আউয়াল) রবিবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে।
গতকাল সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। এদিন সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুনিম হাসান। রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অতিরিক্ত সচিব জানান, দেশের সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদফতর, মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪৪ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি।
এজন্য আজ মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সফর মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হচ্ছে। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হবে। আগামী ৯ অক্টোবর (১২ রবিউল আউয়াল) দেশে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে। বাংলাদেশে ঈদে মিলাদুন্নবীর (সা.) দিন সাধারণ ছুটি।
উল্লেখ্য, মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এর আগমন উপলক্ষে আল্লাহর শুকরিয়ার্থে শরীয়ত সম্মতভাবে খুশি উদযাপন করাই হলো ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। নবী-রাসুল প্রেরণের ক্রমধারায় শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.) এর আবির্ভাব ছিল একটি বিস্ময়কর ব্যাপার। হযরত ঈসা (আ.)-এর পর দীর্ঘদিন পর্যন্ত এ ধরায় নবী-রাসুলের আগমন ঘটেনি। এ অবস্থায় বিশ্বের সর্বত্রই অত্যাচার-অনাচার, কুসংস্কার, নিষ্ঠুরতা ও সামাজিক দ্ব›দ্ব-সংঘাতের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। এহেন চরমতম মানবিক অসাম্য ও মানবাধিকার বৈষম্যের ঘোর অন্ধকার যুগে আবির্ভূত হন মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.)।
ঈদ অর্থ আনন্দ, খুশী, উৎসব। আর মিলাদ শব্দের অর্থ জন্ম বা জন্মবৃত্তান্ত। ¯্রষ্টার সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব নুরুন্নবী (সা.)-এর শুভাগমন। মহান আল্লাহ পাক বলেন, ‘হে রাসুল (সা.), আমি আপনাকে সমগ্র জাহানের জন্য একমাত্র রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’
নবী করীম (সা.) এর আগমনে আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হয় আহলান ছাহলান, মারহাবান-মারহাবান! হযরত মা আমেনা বলেন, তাঁর জন্মলগ্নের পর মুহূর্তেই একটা নূর প্রকাশিত হল, যার আলোতে পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের সবকিছু আলোকিত হয় এবং যার আলোতে সিরিয়ার শাহী মহল মা আমেনা দেখতে পান।
হযরত আলী (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নুরুন্নবী (সা.)- এর মিলাদ শরীফের সম্মান করবে তার মৃত্যু ঈমানের সাথে হবে এবং তিনি বিনা হিসাবে বেহেস্তে যাবেন।’
নূরনবী (সা.)-এর রওজা শরীফে ৭০ হাজার ফেরেস্তা আকাশ হতে জুলুছ (মিছিল) সহকারে দৈনিক ২ বার ফজর ও আছরে আসেন এবং সালাম পেশ করতে থাকেন। কিয়ামত পর্যন্ত এ নিয়ম চলতে থাকবে। হযরত আদম (আ.) হতে হযরত ঈসা (আ.) পর্যন্ত সকল নবী ও রাসুলগণ ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মজলিস পালন করতেন (মাদারেজুন্নবুয়ত)।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ফরমান, নিশ্চয়ই আল্লাহ এবং তার ফেরেস্তাগণ নবী (সা.)-এর উপর দরুদ পেশ করছেন।’ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ও তাঁর উপর দরুদ ও সালাম পেশ কর আদবের সাথে। (সূরা আহযাব ঃ ৫৬)। এ থেকে প্রতীয়মান হয়, রাসূল (সা.) এর মর্যাদা কত বেশি এবং তাঁর মিলাদুন্নবী পালন করা ও তাঁর প্রতি দরুদ-সালাম পেশ করা কত জরুরি।