পতেঙ্গা সৈকত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধের দাবি সিপিবির

34

পূর্বদেশ অনলাইন
নগরের সর্বশেষ উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র প্রকৃতির অপার দানে গড়ে ওঠা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার চক্রান্ত প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, পত্রিকান্তরে আমরা জানতে পেরেছি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের অজুহাত দেখিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের একাংশ প্রাইভেট জোন ঘোষণা করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে। আমরা এই গণবিরোধী, তুঘলকি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত চট্টগ্রামের সর্বশেষ বিনোদন কেন্দ্র যেখানে মানুষ অবসর সময়ে একটু স্বস্ত্বির নিশ্বাস নিতে পারে। এটি প্রকৃতির দানে গড়ে ওঠা সম্পদ, কোনো ব্যক্তিবিশেষের তৈরি নয়। চট্টগ্রাম শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত যেসব জায়গা ছিল, উন্নয়ন আর আধুনিকায়নের নামে একে একে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।ফয়’স লেক বেসরকারি খাতে ইজারা দিয়ে অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্তে ডিসি হিল বন্ধ হয়ে আছে। সংস্কারের নামে ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। জাতিসংঘ পার্ককে ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে। কাজীর দেউড়িতে যে সবুজ, শ্যামল খোলা প্রান্তর ছিল সেখানে শিশুপার্ক বানিয়ে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। সিআরবির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধ্বংস করে হাসপাতালসহ নানা স্থাপনা গড়ে তোলার চক্রান্ত চলছে। এই শহরে এখন মানুষের ঘুরে বেড়ানোর জন্য এক টুকরা উন্মুক্ত প্রান্তর আর অবশিষ্ট নেই। সন্তানদের খেলার কোনো জায়গা নেই। সর্বশেষ পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতও বেসরকারি খাতে দিয়ে অবরুদ্ধ করে ফেলার এ প্রক্রিয়া আমরা মেনে নিতে পারি না। সিডিএ বলছে, রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় মেটাতে নাকি তারা সমুদ্র সৈকত ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর চেয়ে অপরিণামদর্শী, গণবিরোধী বক্তব্য আর হতে পারে না। সিডিএর কাছে যদি রক্ষণাবেক্ষণের টাকা না থাকে, তাহলে টাকা খরচ করে সৈকতের সংস্কার করল কেন? এভাবে বেসরকারি খাতে সৈকত দিয়ে দিলে সেখানে তো সর্বসাধারণের অবাধ যাতায়াতের অধিকার খর্ব হবে। শুধু বিত্তবানদের জন্য সুযোগ তৈরি হবে, বঞ্চিত হবেন আপামর জনসাধারণ। সিডিএ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, তাদের তো নাগরিকের অধিকার খর্ব করার এখতিয়ার নেই। সিপিবি নেতারা বলেন, আমরা সিডিএকে বলতে চাই, সমুদ্রসৈকত জনগণের সম্পদ। আপনাদের কোনো অধিকার নেই এ সম্পদ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার। আপনাদের অধিকার নেই এই সম্পদ শুধু বিত্তবানদের হাতে তুলে দেওয়ার। আপনারা এ চক্রান্ত বন্ধ করুন। জনস্বার্থ, জনগণের ন্যায্য অধিকার যেখানেই লঙ্ঘিত হয়েছে, সিপিবির পক্ষ থেকে আমরা প্রতিবাদ করেছি, রুখে দাঁড়িয়েছি। একইভাবে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার এ গণবিরোধী সিদ্ধান্তও রুখে দেওয়ার জন্য আমরা সর্বস্তরের জনতাকে আহ্বান জানাচ্ছি।