পটিয়া-কর্ণফুলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

116

টানা বর্ষণে পটিয়া ও কর্ণফুলীতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কর্ণফুলীতে বড় ধরণের কোন সমস্যা না হলেও পটিয়া পৌরসভাসহ ১৭ টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে।
শ্রীমাই খালের বেড়ি বাঁধের দুটি অংশ ভেঙ্গে পড়ে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়ে ঘরবাড়ি ভাঙনের সম্মুখীন হয়েছে। প্রায় দুই শতাধিক পুকুরের পোনা ও মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়াও পৌর সদরের ডাক বাংলোর মোড়, পোস্ট অফিস মোড়, স্টেশন রোড, সবুর রোড এলাকায় পানি জমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা।
কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান ও পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসময় ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন তারা।


সূত্র জানায়, গত রবি ও সোমবার দিনভর বৃষ্টির পর পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয় উপজেলার কেলিশহর, হাইদগাঁও, কচুয়াই, খরনা, ভাটিখাইন, ছনহরা, জঙ্গলাইন, বড়লিয়া, ধলঘাট, হাবিলাসদ্বীপ, জিরি, কুসুমপুরা, আশিয়া, কাশিয়াইশ, কোলাগাঁও ছাড়াও পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে উপজেলার স্কুল, কলেজ মাদ্রাসার ছাত্রদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। পৌর সদরের রামকৃষ্ণ মিশন রোডে কোমর পর্যন্ত পানি জমে থাকায় স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা এসব পানির মধ্য দিয়ে সকাল থেকে চলাচল করতে দেখা যায়। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের মৌলভী হাটের ইসমাইল, মুজিবুর রহমান, আবদুল মান্নান, ইসহাক মিয়ার মাটির বসতঘর ভেঙে পড়ে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে আটকা পড়েন মোহাম্মদ মোক্তার (২৬) নামের এক ব্যক্তি। পরে কেলিশহর এলাকার স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করেন। পানিতে ডুবে কেলিশহর এলাকার মুজিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তির একটি গরু বাছুর মারা গেছে।
শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি ও বৃষ্টি পানি চলাচল করছে। বেড়িবাঁধের ভাটিখাইন, ছনহরা ও কচুয়াই এলাকায় কয়েকটি জায়গায় ভেঙে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভাটিখাইন ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বখতিয়ার জানান, শ্রীমাই খালের ধোপাপাড়া, মোতাহের নবীর বাড়ির পেছনেসহ তিনটি অংশে ভেঙ্গে যায়। ভাটিখাইন ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ড ৭নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া পানিতে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শতাধিক পুকুরের মাছের পোনা পানিতে ভেসে যায়।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিশু পাইক জানান, অতি বৃষ্টির কারণে আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পুকুরের মাছ ও খেত খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান জানিয়েছেন,টানা বর্ষণে পটিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যেসব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শনসহ ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা সংগ্রহ করার কাজ চলছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো সরেজমিন পরির্দশন করা হয়েছে। সরকারিভাবে তাদের সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করা হবে।