পটিয়ায় স্বামীকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যু, স্ত্রীর লাশ দেখে মারা গেলেন স্বামী

51

শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত স্বামীকে বাঁচাতে হাসপাতাল নেয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন রত্না দাশ (৫০)। গতকাল বুধবার ভোররাতে প্রিয়তম স্বামীকে পটিয়া হাসপাতালে নেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিএনজি অটোরিকশাযোগে চমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পেছন থেকে মালবাহী লরি চাপায় ভোর ৫টায় তিনি নিহত হন। ওই ঘটনায় স্বামীসহ আরো ৩ জন আহত হয়। বিকালে স্ত্রীর লাশ গ্রামের বাড়িতে আনার সময় শেষবারের মত আহত স্বামীকে নিহত স্ত্রী রত্না দাশের মুখ দেখানো হয়। এরপরই বিকাল ৫টায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে স্বামী বাদলের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় আহত অবস্থায় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন নিহতের বড়পুত্র বিধান দাশ (৩৮) ও সিএনজি অটোরিকশা চালক খোরশেদ আলম (৩৭)।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত মঙ্গলবার রাতে পটিয়া পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাদল দাশ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হলে ভোররাতে তাকে পটিয়া হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে বুধবার ভোর ৫টায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়কের পটিয়া উপজেলার মনসা বাদামতল এলাকায় নগরমুখী মালবাহী লরি (চট্টমেট্রো ট-১১-৫৯৬৩) সিএনজি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এসময় রত্না দাশ ছিটকে রাস্তায় পড়ে গেলে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয় এবং অন্যরা আহত হয়। এরপর তাদের উদ্ধার করে আবারও পটিয়া হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সকলকে এম্বুলেন্সযোগে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালে নেয়ার পথে রত্মা দাশের মৃত্যু হয়। আইনী প্রক্রিয়া শেষে বিকালে রত্না দাশের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনার আগে আহত স্বামীকে নিহতের মুখ দেখানো হয়। এরপর স্বামীও হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
বাদল-রত্নার ২ পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে। এই দুর্ঘটনায় আহত বড় পুত্র বড়পুত্র বিধান দাশ (৩৮) এর একটি পানের দোকান রয়েছে। তাদের বাড়িতে স্বজনদের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই মুজিবুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং মালবাহী লরিটি আটক করা হয়েছে।