পটিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে মামলা

15

পটিয়া প্রতিনিধি

যুবলীগ নেতার ঘরে ভাঙচুরের অভিযোগে পটিয়া উপজেলার শোভনদন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান এহসানুল হককে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দায়েরকৃত মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে তাতে আরো ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার পটিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যুবলীগ নেতার স্ত্রী সোলতান আহমদ প্রকাশ খোকার স্ত্রী সেলিনা পারভিন রুমা মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন শোভনদন্ডী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বলির বাড়ির আবু সৈয়দের ছেলে মোহাম্মদ সায়েম, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আরিফ মোহাম্মদ সজল, জালাল উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ এরশাদ, মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ এমদাদ, মীর আহমদের ছেলে মোহাম্মদ আবছার খান, মোহাম্মদ আলীর ছেলে শান্ত মাহমুদ, মৃত আবু ছৈয়দের ছেলে মোহাম্মদ জামাল, হাফেজ আহমদের ছেলে বাহাদুর, মৃত কামাল উদ্দীনের ছেলে মোহাম্মদ রায়হান, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে সাখাওয়াত হোসেন, আবদুল খালেক এর ছেলে মোহাম্মদ সাব্বির। স্থানীয়রা জানান, আসন্ন ইউপি নির্বাচনের উত্তাপের অংশ হিসেবে এসব ঘটনার জন্ম হয়েছে। যা সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর পটিয়া মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন শোভনদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুল হক। ওই ঘটনায় রাতেই চেয়ারম্যানের ভাই এমদাদুল হক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় যুবলীগ নেতা সুলতান আহমদ খোকা (২২), মোহাম্মদ সোহেল (৩৫) ও আবু তৈয়ব (৪২), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসান প্রকাশ খোকন (৫২) ও ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোজাম্মেল হক (৪৩) কে।
গতকাল দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জম্মদিন অনুষ্ঠানে বাদিনীর স্বামী যুবলীগ নেতা সোলতান আহমদ প্রকাশ খোকা মিছিল সহকারে যোগদানকালে মিছিলে হামলা চালায় চেয়ারম্যান এহসানুল হক। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান এহসান আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মিছিলে বাঁধা দেয় এবং পকেটে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এর জের ধরে ওইদিন সন্ধ্যায় শোভনদন্ডীর হাওয়া খানা এলাকায় পুনরায় দুই দফায় খোকা ও তার অনুসারীদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। সে সময় মামলার বাদিনী রুমাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায় এবং অবৈধভাবে ঘরে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে।
এ বিষয়ে মামলার বিবাদী ও ইউপি চেয়ারম্যান এহসানুল হক জানান, এটি একটি সাজানো মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তারা রাতের আঁধারে আমার উপর হামলা চালিয়ে আমাকে আহত করেছে। এ ঘটনায় আমি মেডিকেল থেকে চিকিৎসা নিয়ে একইদিন রাতে থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। একটি কুচক্রী মহল আমাকে ফাঁসানোর জন্য নানাভাবে এলাকায় অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
মামলার বাদী সেলিনা পারভিন রুমা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান এহসানসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা আমার স্বামীকে মেরে ফেলতে তার উপর হামলা চালিয়েছে। পরে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার বাহিনীসহ আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। এছাড়া আমাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে। আমি এর সুবিচার চাই।
শোভনদন্ডী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি খোকন বলেন, রাতে আমরা হাওয়া খানা এলাকায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় সিএনজি অটোরিকশাযোগে চেয়ারম্যান যাওয়ার পথে জ্যামে আটকা পড়েন। ওই সময় খোকার সাথে চেয়ারম্যানের বিবাদ হয়। আমি উভয়কে ছাড়িয়ে দেই। পরে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে খোকার ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে তার মা ও বউকে মারধর করে। ওই ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়। পরে আজ একটি মামলা দায়ের করা হয়। তাতে চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।