পটিয়ার মরা ৪ খাল নিয়ে মরণ দশা

28

আবেদ আমিরী, পটিয়া
পটিয়া পৌর এলাকার চারটি মরা খালে মরার দশা হয়েছে পৌরবাসীর। শুকনো মৌসুমে পানির স্্েরাত না থাকলেও বর্ষাকালে পানির ¯্রােতে ভেসে যায় পৌর এলাকার অধিকাংশ ঘরবাড়ি আর রাস্তাঘাট। দীর্ঘদিন ধরে এসব খাল খনন এবং প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে পানির ¯্রােতে তলিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়দের ঘরবাড়ি। খালের পানিতে ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এলাকার রাস্তাঘাট।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পটিয়া পৌর এলাকার উপর দিয়ে বহু পুরনো চারটি খাল রয়েছে। কিন্তু এসব খালে দীর্ঘদিন ধরে পানির কোন ধরনের প্রবাহ ছিলো না। পানি চলাচলের অভাবে স্থানীয়দের গৃহস্থালী কাজে ব্যবহৃত পানি খালে জমে থাকে। এর ফলে খালগুলো থেকে প্রতিনিয়ত পচা দুর্গন্ধ ছড়ায়। ময়লা-অবর্জনা ও লতা-গুল্মের কারণে খালও ভরাট হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুম শুরু হলে বৃষ্টির পানির ¯্রােত খাল উপচে লোকালয়ে চলে আসে। এর সাথে ময়লা-আবর্জনাও নিয়ে আসে। দীর্ঘদিন ধরে এসব খাল খনন ও উভয় পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল পৌরবাসী। কিন্তু যথাযথ উদ্যোগ না নেয়ায় চরম কষ্টে দিন যাপন করতে হচ্ছে পৌর এলাকার বাসিন্দাদের।
গত ২০১৯ সালে উত্তর গোবিন্দারখীলস্থ মরা খালের খনন কাজ শুরু করা হলেও পুরোপুরি সম্পন্ন করেনি ঠিকাদার। খাল খননের মাঝ পথে তারা পালিয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান শতবর্ষের ডেল্টা প্ল্যানের আওতায় পটিয়াসহ সারা দেশের ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের (১ম পর্যায়ে) কাজ আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে এ কাজ শুরু করেন। প্রথম পর্যায়ে পটিয়ার সুচক্রদন্ডী গ্রামে ৮১ লাখ ৭১ হাজার টাকার কাজটি পেয়েছেন মেসার্স মোস্তফা এন্ড সন্স। প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৫ কিলোমিটারের বেশি খাল খনন করার কথা। সরকারের প্ল্যান অনুযায়ী খালের খনন সম্পন্ন হলে পটিয়া পৌর এলাকার বিশাল একটি অংশ ও হাইদগাঁও ইউনিয়নের জলাবন্ধতা নিরসন হতো।
পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের পানি দিয়ে ইরিগেশনের মাধ্যমে শুকনো মৌসুমে চাষাবাদ সম্ভব হতো। গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কাজটি শুরু হলেও শেষ হয়নি। বিপত্তি বাধে ঠিকাদারের গাফেলতি, অনিয়ম এবং মাটি বিক্রিকে কেন্দ্র করে। এ কারণে ওই খালের সুফল পায়নি এলাকার বাসিন্দারা। অপর দুটি খালের খননের কোন উদ্যোগই এ পর্যন্ত নেয়া হয়নি।
এদিকে বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণে শ্রীমাই মরা খাল দিয়ে পানির ঢলে পৌরবাসীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এসব খালের বিষয়ে পৌরসভার পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিকট পৌরসভার খালগুলো খকনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য গত ৫-৬ মাস ধরে আবেদন নিবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
গত রবিবার পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকা ও খালের পানিতে ভেঙে যাওয়া রাস্তাঘাট পরিদর্শন করেন। এসময় কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন আজাদ, সরওয়ার কামাল রাজীব, জসিম উদ্দিন, ইয়াছমিন আকতার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, শহীদুল ইসলাম, আলমগীর, আমির খসরু, নজরুল ইসলাম ঝণ্টু, আমির হোসেন আমু, শামসুল আলম, (বি.কম), মোহাম্মদ জয়নাল, মোহাম্মদ বেলাল, মোহাম্মদ শাহাজাহান, মোহাম্মদ কুববাত গণি।
এ প্রসঙ্গে মেয়র আইয়ুব বাবুল বলেন, এসব খাল খনন, শাসন ও উভয় পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের জন্য তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বার বার আহবান জানিয়েছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দ্রæত খালগুলোর খনন ও ওয়াকওয়ে নির্মাণর আহবান জানান।