পজিটিভ বাঁশখালীর প্রতিচ্ছবি

80

পূর্বে পাহাড় আর পশ্চিমের সাগর বেষ্টিত অপূর্ব সৌন্দর্যের অন্যতম লীলাভূমি চট্টগ্রামের বাঁশখালী। শিল্প, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রকৃতিজাত সম্ভাবনার অমিত সম্ভারে ভরপুর এই নান্দনিক জনপদ। যেন স্রষ্টার সুনিপুণ হাতে গড়া। এই জনপদের সুখ দুঃখের সাথী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে নিউজ পোর্টাল বাঁশখালী টাইমস ডট কম। এই পোর্টালটি বাঁশখালীবাসীর হাসি-কান্না, পাওয়া-না পাওয়া, অভাব-দুর্ভোগ, গৌরব-সফলতাসহ সবকিছুকে ধারণ করে বেশ সুনামের সাথে পার করেছে চতুর্থ বর্ষপূতি। এই উপলক্ষে বাঁশখালী টাইমস প্রকাশ করেছে বর্ষপূর্তি স্মারক। স্মারটিতে বাঁশখালী নিয়ে বিশিষ্টজনদের নানা চিন্তা-ভাবনার পাশাপাশি প্রকাশিত হয়েছে বাঁশখালীর ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কিত সমৃদ্ধ নানা লেখা। স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী মুহাম্মদ গালিবসহ আট জন বিশিষ্ট ব্যক্তির শুভেচ্ছা বাণী ও শুভেচ্ছা মন্তব্য দিয়ে ম্যাগাজিনের শুরু। এরপর পোর্টালের নানা বিষয় নিয়ে থাকছে নির্বাহী সম্পাদক আরকানুল ইসলামের লেখা উপসম্পাদকীয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তপন মিত্র চৌধুরী ‘বাঁশখালীর উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক লেখার মধ্য দিয়ে শুরুতেই তুলে ধরেছেন বাঁশখালী নিয়ে নানা স্বপ্ন, দিয়েছেন উন্নয়ন, অগ্রগতির দিক নির্দেশনা। শঙ্খ নদী নিয়ে লেখা কবি ও সাহিত্যিক কামরুদ্দিন আহমদের ‘দেশে ভূৎপন্ন খাঁটি বাংলাদেশি নদী- শঙ্খ’ শিরোনামের প্রবন্ধটি বেশ চমৎকার হয়েছে। এই প্রবন্ধে শঙ্খ নদী ঘনিষ্ঠ নানা তথ্য, উপাত্তের সমাবেশ ঘটেছে। এই প্রবন্ধ পড়ে শঙ্খ নদী সম্পর্কে পাঠক বিশদ ধারণা পাবে। ‘সাধনাই মানুষের বিশালতা’ শিরোনামে কলামিস্ট ড. মুহাম্মদ মাসুম চৌধুরীর মোটিভেশনাল প্রবন্ধটি মনযোগী পাঠককে ভাবাবে। বিশেষ করে তরুণ, যুবশেশ্রণী এই প্রবন্ধ পড়ে একটু হলেও চিন্তা করবেই। লেখক না হয়েও যে লেখকদের মতো নান্দনিক শব্দ চয়ন ও ভাবাবেগে লেখা যায়’ আসুন জলকদরের কদর করি প্রবন্ধে তাই যেন দেখিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন পিপিএম। তাঁর কন্ঠে সুর মিলিয়ে আমরাও বলতে চাই, জলকদর দখলমুক্ত হয়ে ফিরে পাক হারানো ঐতিহ্য। বাঁশখালী যে কয়েকটি কারণে বিখ্যাত তার অন্যতম মৃৎশিল্প। সেই মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তপ্রায়। এই বিলুপ্ত প্রায় মৃৎশিল্পের আদ্যোপান্ত নিয়ে শিশুসাহিত্যিক জুবাইর জসীম লিখেছেন ‘বিলুপ্তির পথে বাঁশখালীর মৃৎশিল্প’ প্রবন্ধ। ভাল পরিবার, বিদ্যালয় ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে জীবনবোধ বিষয়ক নিবন্ধ লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক কাজী মুহাম্মদ জামশেদ। সংগঠক ও প্রাবন্ধিক মোখতার হোসাইন সিকদার লিখেছেন হাটখালী বন্দর, জলকদর ও তারুণ্য নিয়ে। পুরো স্মারকজুড়ে কাজী শাহরিয়ারের তিনটি অনুগল্পই যেন হাসির খোরাক। তবে তাতে শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুও রয়েছে। এরপর নাফীছাহ ইফফাত লিখেছেন ‘অন্যরকম সাড়া শীর্ষক গল্প। সেই অন্যরকম সাড়াটা কীরকম তা জানতে গল্পটা পড়তেই হবে। ‘প্রশান্তে অশান্ত রজনী’ শিরোনামে সমুদ্রের ভ্রমণকাহিনী লিখেছেন পরিবব্রাজক ক্যাপ্টেন নুর মোহাম্মদ। বাঁশখালীর কাক্সিক্ষত উন্নয়নের অন্তরায় প্রসঙ্গে লিখেছেন আহসানুল হক হানিফ। তার লেখাটি বাঁশখালীর দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তারুণ্যের ক্যারিয়ার ও কর্মসংস্থান ভাবনা লিখেছেন ব্যাংকার আমজাদুল আলম মুরাদ। তিনি লেখার মাধ্যমে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের যেন চেতনায় নাড়া দিয়েছেন। করোনাকালীন বাঁশখালী ও সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে লিখেছেন বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. সওগাত উল ফেরদৌস। তিনি ডাক্তার হয়েও পুরোদস্তর লেখকের মতো দারুণভাবে লেখাটি উপস্থাপন করেছেন। এরপর নিজের করোনা আক্রান্তের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন চট্টগ্রামের প্রথম করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক ডা. আসিফুল হক। বাঁশখালীর ঐতিহ্যবাহী মলকা বানু ও মনু মিয়ার প্রেম উপাখ্যান নিয়ে লিখেছেন মুহাম্মদ তাফহীমুল ইসলাম। বাঁশখালী উপকূলের বাতিঘর হিসেবে খ্যাতি পাওয়া ছনুয়া উপকূলীয় পাবলিক লাইব্রেরী নিয়ে লিখেছেন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক সাঈফী আনোয়ারুল আজিম। ক্যারিয়ার বিষয়ক দিকনির্দেশনা মূলক প্রবন্ধ লিখেছেন এয়ার মু. জুয়েল তাজিম, এছাড়াও জমি বিরোধ নিষ্পত্তি, বাঁশখালীর কৃষি অর্থনীতি, পর্যটন ও ক্রীড়া বিষয়ে লিখেছেন যথাক্রমে মালেকুজ্জামান রাজু, আশিক সায়েম, নুরুল আজিম ইমতিয়াজ, মঈনুল আজীম প্রমুখ। কবিতার ফুল বিভাগে লিখেছেন- হাফিজ রশিদ খান, ইলিয়াস বাবর, এম এ করিম, সালসাবিলা নকি, শোয়াইব শাহরিয়ার, জাহেদ উদ্দীন মোহাম্মদ, মখছুছ চৌধুরী, মশিউর রহমান আবির, জালাল উদ্দীন ইমন, মঈনুল ইসলাম, জাকারিয়া রহমান, জয়নাল আবেদীন, দিলুয়ারা বেগম ভাবনা, কাশেফ উদ্দীন। বাঁশখালী টাইমস সম্পাদক আবু ওবাইদা আরাফাতের সম্পাদনায় ৮৪ পৃষ্ঠার ম্যাগাজিনটির মূল্য রাখা হয়েছে মাত্র ত্রিশ টাকা। বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতের ছবি সংবলিত প্রচ্ছদে প্রকাশিত ম্যাগাজিনটি অভিজাত বই বিপণন কেন্দ্র বাতিঘর, চকবাজারস্থ ঘুণসহ বাঁশখালীর বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে।