নৌকার প্রচারণায় গতি এনেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা

63

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রথম দশদিনে আওয়ামী লীগের প্রচারণা চলেছিল ঢিমেতালে। দিনরাত বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচারণা চালালেও ভোটারদের মধ্যে যেন হতাশা বিরাজ করছিল। প্রচারণার শেষ সময়েই আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচন সমন্বয়ের দায়িত্ব নেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। হাইকমান্ডের নির্দেশে একে একে চট্টগ্রামে উড়ে আসেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। গত পাঁচদিনে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের প্রচারণায় ঝড় তুলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। গতকাল প্রচারণায় অংশ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে বাড়তি হাওয়া যোগ করেছেন চলচ্চিত্র জগতের নায়ক-নায়িকারা।
জানা যায়, গত এক সপ্তাহে একে একে চট্টগ্রামে আসা-যাওয়া করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এসএম কামাল উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, বন ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য মাহমুদ সালাহউদ্দিন চৌধুরী, শ্রম ও জনশক্তি উপ-কমিটির সদস্য মাহফুজুর হায়দার চৌধুরী রোটনসহ কমপক্ষে ২০ জন নেতা। এছাড়াও আরো কয়েকজন মন্ত্রী-এমপিও চট্টগ্রামে আসেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, শেখ নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাসেল, উপ-প্রচার সম্পাদক আদিত্য নন্দী, সহ-সম্পাদক নাছির উদ্দিন মিন্টুসহ কমপক্ষে ১৫ জন কেন্দ্রীয় নেতা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল চন্দ্র গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমানসহ আরো কয়েকজন নেতা প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
তবে গতকাল থেকে প্রচারণায় নেমে ভোটারদের আকৃষ্ট করেছেন চলচ্চিত্র জগতের তারকারা। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বর থেকে বিকাল ৩টায় প্রচারণা শুরু করেন শোবিজ তারকারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, চিত্রনায়ক রিয়াজ, নায়িকা অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহি, অরুণা বিশ্বাস, তারিন জাহান, তানভীন সুইটি, বিজরী বরকতুল্লাহ, মীর সাব্বির ও সায়মন সাদিক। তারকারা এসময় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, চসিক নির্বাচনে প্রচারণা নিয়ে ভোটাররা সন্তুষ্ট ছিলেন না। মাঠের পরিস্থিতি বুঝে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আওয়ামী লীগের নেতারা চট্টগ্রামে ছুটে আসেন। নেতারা সবাই মিলে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের ক্রুটিগুলো চিহ্নিত করেই কাজে নেমে পড়েন। প্রচারণায় গতি আনতে ও দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে যা কিছু প্রচেষ্টা সবই করা হয়েছে।
নগর আওয়ামী লীগের দুইজন নেতা জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা ভোটের প্রচারণায় নামার আগে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীনকেই সবচেয়ে বেশি প্রচারণায় সক্রিয় দেখা গেছে। প্রতিদিনই তিনি প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। তবে অন্যান্য নেতারা নিয়মিত প্রচারণা না করার বিষয়টি কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টিগোচর হয়। অনেক নেতা দলীয় মেয়র প্রার্থীর চেয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর বানানো নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। যে কারণে কড়া বার্তা নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড। বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্যে আগামীতে মনোনয়ন ও দলীয় পদ বঞ্চিত করার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া বার্তা পৌঁছে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এর পরেই ভোটের মাঠের চিত্র পাল্টাতে থাকে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে সার্বক্ষণিক চট্টগ্রামে থাকার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল হানিফ পূর্বদেশকে বলেন, নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত আওয়ামী লীগ প্রচারণায় ভালো অবস্থানে আছে। নেতারা স্বতস্ফুর্তভাবেই প্রচারণা চালাচ্ছে।