নেভাল একাডেমিতে শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ

11

পূর্বদেশ অনলাইন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে অনুষ্ঠিত মিডশিপম্যান ২০১৯/এ ব্যাচ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২১/বি ব্যাচের শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অবলোকন এবং সালাম গ্রহণ করেছেন।

সোমবার (২০ ডিসেম্বর) কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৩৬ জন মিডশিপম্যান এবং ৮ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৪৪ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন।

এর মধ্যে ৫ জন নারী মিডশিপম্যান এবং ২ জন নারী ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার রয়েছেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জনকারীদের হাতে পদক তুলে দেন।

সদ্য কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে মিডশিপম্যান ২০১৯/এ ব্যাচের মো. মোহতাসিম সিফাত সব বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন করে সেরা চৌকস মিডশিপম্যান হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন। এ ছাড়া মিডশিপম্যান আলিফ আব্দুল্লাহ প্রশিক্ষণে ২য় সর্বোচ্চ মান অর্জনকারী হিসেবে ‘নৌ প্রধান স্বর্ণপদক’ এবং ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২১/বি ব্যাচ থেকে অ্যাক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট মো. আব্দুল মমিন শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনকারী হিসেবে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ অর্জন করেন।

ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে কুচকাওয়াজ অবলোকনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার দায়িত্বভার গ্রহণের পর জাতির পিতার প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে নৌবাহিনীকে একটি যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যুদ্ধজাহাজ সংযোজন এবং বিদ্যমান জাহাজগুলোর অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা নিয়েছে।

সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্রসম্পদকেও যেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যায় এ লক্ষ্য নিয়েই সরকার ব্লু-ইকনোমির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফটসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। এ ছাড়া নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে ভবিষ্যতে আরও উন্নততর জাহাজ এবং আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পেকুয়ায় স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি বানৌজা শেখ হাসিনা নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। নৌবাহিনীর দক্ষ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত শিপইয়ার্ড ও ডকইয়ার্ডগুলো ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক জাহাজের পাশাপাশি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে।

প্রধান অতিথি বলেন, নবীন কর্মকর্তারা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদের যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে গড়ে তুলবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে এ প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে।

তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেওয়ায় নবীন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। সেই সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নবীন কর্মকর্তারা কাজ করে যাবে বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং শিক্ষা সমাপনী ব্যাচের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।