নেত্রকোনার ৫ জনের রায় যে কোনো দিন

39

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে নেত্রকোনার মাওলানা আব্দুল মজিদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার রায় যে কোন দিন দেওয়া হবে। রায় ঘোষণার জন্য সিএভি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এটি হবে ট্রাইব্যুনালের ৩৬তম রায়।
গতকাল সোমবার চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। তবে পাঁচ আসামিই পলাতক রয়েছে। এ মামলায় প্রথমে ছয়জন আসামি ছিলো। তার মধ্যে একমাত্র আসামি আব্দুর রহমান (৭০) কিছুদিন আগে মারা যায়। ফলে তাকে মামলার আসামি থেকে বাদ দেওয়া হয়। আব্দুল মজিদ ছাড়াও বাকি আসামিরা হলেন মো. আব্দুল খালেক তালুকদার (৬৭), মো. কবির খান (৭০), আব্দুস সালাম বেগ (৬৮) ও নুরউদ্দিন (৭০)।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল, সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নী। আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল জানান, এ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। যে কোনদিন রায় দেওয়ার জন্য মামলাটি সিএভি করেছে ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের অপরাধ প্রসিকিউশন পক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম অন্যদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী তামিম জানান, প্রসিকিউশন পক্ষ তাদের রাজাকার প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া এর মধ্যে আব্দুল খালেক তালুকদার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি রাজাকার ছিলেন না এ কথা স্থানীয় ১৩৮জন মুক্তিযোদ্ধারা লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিহিংসাবশত তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর এ মামলায় পলাতক পাঁচ আসামির জন্য এ্যাডভোকেট গাজী তানিমকে আইনজীবী নিয়োগ করেন। ওই বছরের ২২ মে ছয়জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন। ১৬ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের চ‚ড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আটজন নিরীহ মানুষকে অপহরণের পর হত্যা, তিনটি বাড়ির মালামাল লুট, আটটি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগ। ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত ১ বছর ১ মাস ৫ দিনে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করেছে তদন্ত সংস্থা। দীর্ঘদিন মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় গতকাল সোমবার মামলাটি সমাপ্ত হয়।
­