নেতাকর্মীদের নামে মামলা ও বাসায় বাসায় তল্লাশির নিন্দা ফখরুলের

3

পূর্বদেশ ডেস্ক

বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে ‘মিথ্যা মামলা’ দায়ের ও রাতের আঁধারে বাসায় বাসায় তল্লাশি চালানোর অভিযোগ এনে এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এ নিন্দা জানান। বিবৃতিতে চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন মির্জা ফখরুল। একইসঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত বিএনপি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, হয়রানি বন্ধের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
ফখরুল বলেন, ‘সারা দেশে বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নির্মূলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই সরকার। গত সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুর্নীতিবাজ সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন ও বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিতে দেশব্যাপী সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার তার অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অপব্যবহার করেছে’।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চট্টগ্রামে সমাবেশে নেতাকর্মীসহ জনসাধারণের ওপর গুলি, লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল নিক্ষেপসহ গ্রেপ্তার ও নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে কর্মসূচি পন্ড করে দেয়া হয়। রাতে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহŸায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়’।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের আটক করতে রাতের আঁধারে তাদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। এসময় তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে অসৌজন্য আচরণ ও হয়রানি করা হয়। হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিতে ঢাকায় আসার পথে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তিসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। এমনকি বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে যোগদানকারী নেতাকর্মীদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগরীতে পুলিশ আতঙ্ক এবং নির্যাতন চালাচ্ছে’।
তিনি বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর, ভৈরবসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মীরা বিএনপির কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। কুলিয়ারচর উপজেলাধীন সালুয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সরাপ উদ্দিন সুপন, ফরিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জালালসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমসহ কুলিয়ারচর উপজেলা ও পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে’।
বিএনপির এই নেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এসব মিথ্যা মামলা, বাসায় বাসায় তল্লাশি, গ্রেপ্তার আতঙ্ক সৃষ্টি করে জনগণের এই চলমান আন্দোলন কোনোভাবেই দমন করা যাবে না। জনগণের তীব্র আন্দোলনের মুখে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন সবক্ষেত্রে ব্যর্থ এই সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে হামলা, মিথ্যা মামলা দায়ের, নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় রাতের আঁধারে তল্লাশি করে ভয়ভীতির সঞ্চার, গণগ্রেপ্তার চালিয়ে তাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে পারবে না। সরকারের সব হামলা, মামলা, নির্যাতনকে উপেক্ষা করে এদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ রাজপথের আন্দোলন আরও বেগবান করে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটাবে’। খবর বার্তা সংস্থার
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশররফ হোসেন দীপ্তিসহ আটককৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও হয়রানি বন্ধের আহবান জানান। সেইসঙ্গে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহব্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করসহ নেতাদের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার এবং বিনা কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি ও হয়রানি বন্ধের আহবান জানান।