নেই উৎসব, আছে আনন্দ

9

নিজস্ব প্রতিবেদক

বছরের প্রথম দিন সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫ম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে বই বিতরণ করা হয়। চট্টগ্রামের এ বছর ১ কোটি ৯৬ লক্ষ ৮ হাজার ৪৯২ কপি বই বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে মাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে নবম) শ্রেণিতে ১ কোটি ৫০ লক্ষ এবং প্রাথমিকে ৪৬ লক্ষ ৪ হাজার ৮৯২ কপি নতুন বইয়ের চাহিদা রয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছরের ন্যায় এ বছরও হয়নি বই উৎসব। যদিও বছরের প্রথম দিনটিতে নতুন বই নিয়ে উৎসবের অপেক্ষায় থাকে দেশের কয়েক কোটি শিক্ষার্থী। নতুন ক্লাসের সঙ্গে নতুন বই আনন্দ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় ক্লাস অনুযায়ী ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে। তবে গত বছরের মতো এবারও হচ্ছে না বই উৎসব। ফলে একসঙ্গে সব শিক্ষার্থী পাচ্ছে না নতুন বই। অবশ্য ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা আগে জানিয়েছিল শিক্ষা অধিদপ্তর।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী বই উৎসবের পরিবর্তে এবার শুধু বই বিতরণ করা হবে। প্রতিবছরের মতো এবার বই উৎসব না হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বই বিতরণ করা হচ্ছে। জমায়েত না করার জন্য একাধিক দিনে বই বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবার প্রাথমিক স্কুলগুলোতে মোট ৪৬ লাখ ৪ হাজার বই বিতরণ করা হবে। চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলার সবক’টি স্কুলে নতুন বই পৌঁছে গেছে। ধাপে ধাপে প্রতিটি স্কুলে বই বিতরণ করা হবে।
অন্যদিক মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে প্রথম ৩ দিন ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ হবে। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই বিতরণে ১২ দিন সময় পাবে স্কুলগুলো। এ লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবারের আগেই চট্টগ্রামের স্কুলগুলোতে চাহিদার ৫০ শতাংশের বেশি বই পৌঁছে গেছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলাম হোসাইনী পূর্বদেশকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় মাধ্যমিক শ্রেণিতে এ বছর মোট বইয়ের চাহিদা প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ। তবে ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি বই স্কুলে স্কুলে পৌঁছে গেছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় জমায়েত এড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করা হচ্ছে। এবার একসাথে সব শিক্ষার্থীকে বই বিতরণ না করে শিডিউল মেনে এক সপ্তাহব্যাপী স্কুলগুলোতে বই বিতরণ করা হবে। আশা করছি নির্ধারিত সময়েই আমরা বই বিতরণ সম্পন্ন করতে পারবো।
এদিকে বছরের প্রথম দিন বই হাতে উচ্ছ¡াসিত শিক্ষার্থীরাও। তারা জানায়, নতুন বই পেয়েছি, অনেক ভালো লাগছে। একইসাথে আজ নতুন বছরে সবার সঙ্গে দেখা হয়েছে। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজকে শুধুমাত্র পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তার কথা ভেবে এবার উৎসব হচ্ছে না। ধাপে ধাপে সব শ্রেণির বই বিতরণ করা হবে।
এদিকে গতকাল সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম সিটির টাইগারপাস অস্থায়ী ভবনের কনফারেন্স রুমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আন্তঃবিদ্যালয়গুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ‘বই বিতরণ কার্যক্রম’ উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ভার্চুয়ালি পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।