নিয়ম মানছে না মেট্রো অটোরিকশা

31

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীতে আইন অমান্য করে বেশকিছু সিএনজি চালিত অটোরিকশা যাত্রী নিয়ে শহর থেকে বের হচ্ছে আবার কিছু গ্রাম এলাকার অনেক সিএনজি চালিত অটোরিকশা শহরে প্রবেশ করছে। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত শহর ও গ্রামের চালকদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হচ্ছে। প্রায় সময় শহর এবং গ্রামের চালকদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটছে। চালকদের দাবি, মেট্রো গাড়ি মেট্রো এলাকায়, গ্রাম গাড়ি গ্রাম এলাকায় চলাচল করবে। তবে অটোরিকশা অটোটেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, কিছু অতি লোভী চালক আইন অমান্য করে এক এলাকার যাত্রী অন্য এলাকায় পরিবহন করছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন।
এদিকে পুলিশ বলছে, জনবল সঙ্কটের কারণে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়ে উঠে না। অভিযান চলাকালীন সময়ে এই আইন অমান্যকারীদের মামলা ও জব্দ প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হয়।
তবে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবীর নাম দিয়ে বা মাসোহারার বিনিময়ে প্রায় তিন হাজার সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নগরীর প্রবেশ পথ হাটহাজারী নতুন পাড়া এলাকায় অবস্থানকালে দেখা যায়, কিছুক্ষণ পর পর শহর থেকে যাত্রী নিয়ে হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া এলাকার যাত্রী নিয়ে নগরীতে সচরাচর চলাচলকারী সিএনজি চালিত অটোরিকশা/ট্যাক্সি যাত্রী পরিবহন করছে। তবে নতুন পাড়া এলাকায় অবস্থানরত গ্রাম এলাকায় চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশা চালকরা অলস সময় পার করছে। এতে তাদের মনে এক ধরণের মৌন ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। প্রায় সময় গ্রাম এলাকার চালকরা শহর এলাকার চালকদের গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে বললে উল্টা হামলার শিকার হতে হচ্ছে তাদের। তবে নতুন পাড়া এলাকার কিছু চালক মেট্রো এলাকার অটোরিকশাগুলো ঘুরিয়ে নিতে বাধ্য করতে দেখা যায়।
অন্যদিকে গ্রাম এলাকার সিএনজি অটোরিকশা শহর এলাকায় ঢুকলে শহরের চালকরা গাড়ি ঘুরিয়ে নিতে বাধ্য করছেন। এতে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন দুই পক্ষ। এই দ্ব›দ্ব নিরসনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সহায়তা চেয়েছেন চালকরা।
তবে গ্রাম এলাকার সিএনজি অটোরিকশা শহরে প্রবেশ করা মাত্রই আইন অমান্যের দায়ে মামলা করতে দেখা গেছে দায়িত্বরত সার্জেন্টকে। এ বিষয়ে সার্জেন্ট জেকি দাশ বলেন, আমাদের সচরাচর দায়িত্ব এ এলাকায় পড়ে না। তারপরও যখন এখানে ডিউটি করি তখন অবৈধ গাড়ি চোখে পড়লেই আমরা মামলা দিয়ে দেই।
এদিকে গ্রাম এলাকার চালকদের দাবি, সরকার যাকে যতটুকু সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তারা সে এলাকার মধ্যে যাত্রী পরিবহন করবে। কিন্তু এখানে তাদের পেটের ভাত মারার জন্য শহর এলাকার ট্যাক্সি চালকরা গ্রাম এলাকায় প্রতিনিয়ত যাত্রী পরিবহন করে চলছে।
নতুন পাড়া অটোরিকশা অটোটেম্পু চালক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. আলী আকবর বলেন, আইন অমান্যকারীদের আমরা কতক্ষণ পাহাড়া দিব? নিজেদেরও তো কাজ আছে। শহরের ট্যাক্সিগুলো কেন গ্রামে চলাচল করবে। তাদেরকে তো সরকার গ্রামে চলাচলের অনুমতি দেয়নি। তাদের মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচল করার কথা। হাটহাজারীতে ট্রাফিক পুলিশ রয়েছে, তারা কোন ব্যবস্থা নেয় না কেনো। শহরের চালকরা যাত্রী পরিবহন করায় গ্রামের চালকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম অটোরিকশা অটোটেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, কিছু লোভী চালকদের কারণে এ দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। যার এলাকায় সে বিচরণ করবে, এটাই স্বাভাবিক। কেন অন্যের এলাকায় চলে যাবে গাড়ি? পুলিশদের আরও তৎপর হওয়া জরুরি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ পূর্বদেশকে বলেন, গ্রামের গাড়ি শহরে চলাচলের সুযোগ নেই। এটা ট্রাফিক আইন অমান্য। আমাদের সামনে পড়লে সাথে সাথে মামলা বা জব্দ করে ফেলার নির্দেশনা দেয়া আছে। অবৈধ কোন গাড়ি চলাচলের সুযোগ দিইনি আমরা।