নিহত গৃহবধূর বাবা জানেন না কি আইনে মামলা

5

পটিয়া প্রতিনিধি

গত মঙ্গলবার পটিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে উর্মি আকতার (১৯) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ করেন তার বাবা শাহিনুর ইসলাম। মেয়ের ময়না তদন্ত শেষে গত বুধবার থানায় গিয়েছিলেন হত্যা বা আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করতে। কিন্তু থানার এসআই জয়ন্ত দাশ নিহত উর্মির বাবা শাহিনুরকে একটি টাইপ করা কাগজ দিয়ে বলেন তাতে স্বাক্ষর করার জন্য। তখন তাকে বলা হয় সেটি মামলার এজাহার। কিন্ত গত বৃহস্পতিবার মামলার ফটোকপি নিতে গিয়ে জানতে পারেন মামলা নয়, পুলিশ অপমৃত্যুর মামলার আবেদনে স্বাক্ষর নিয়েছেন। আবেদনে লেখা হয় শাশুড়ির সাথে নামাজ পড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে তার মেয়ে উর্মি আত্মহত্যা করেছেন।
গৃহবধূর দুলাভাই মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, লাশের গলায় আত্মহত্যার কোনো চিহ্ন নেই। তবে গলা টিপে ধরায় আঙ্গুলের ছাপ রয়েছে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গৃহবধূর মৃত্যুর আগে ঘরে স্বামী ও শাশুড়ির সাথে উর্মি আক্তারের চরম বিবাদ হয়। পরে তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পটিয়া হাসপাতালের ডাক্তাররাও ফাঁসির আলামত দেখতে না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন এবং ময়না তদন্তের পরামর্শ দেন। সে মতে ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরদিন লাশের ময়না তদন্ত ও দাফন শেষে হত্যা অথবা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করতে যান পটিয়া থানায়। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা এসআই থানার ভেতরে একটি কম্পিউটার থেকে কাগজ প্রিন্ট করেন এবং গৃহবধূর বাবাকে একা ডেকে নিয়ে মামলার এজাহার জানিয়ে তাতে স্বাক্ষর নেন। তাতে কি লেখা ছিলো পড়তে দেয়া হয়নি তখন।
পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, লাশের গলায় ফাঁসির চিহ্ন নেই তা ঠিক। তবে ময়না তদন্তে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। গৃহবধূর বাবার কাছ থেকে তথ্য গোপন করে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়টি তিনি জানতেন না। আত্মহত্যা ব্যতীত হত্যার আলামত ময়না তদন্তে পাওয়া গেলে ওই অফিসারকে দায় নিতে হতে পারে। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
পটিয়া থানার এসআই জয়ন্ত দাশ বলেন তথ্য গোপন করে তিনি অপমৃত্যুর আবেদনে স্বাক্ষর করে কোনো অন্যায় করেননি। প্রয়োজনে পরে হত্যা মামলা দায়ের করা যাবে।