নির্বাচনের আগে আতঙ্ক ছড়াতে চায় আ. লীগ

38

দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহব্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেছেন, বোয়ালখালীতে হামলার ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে ২০/ ২৫ জন সন্ত্রাসী এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও নির্যাতনের যে মহোৎসব আওয়ামী লীগ শুরু করেছে শুক্রবারের ঘটনা ছিল তারই ছোট্ট একটি উদাহরণ।
শুক্রবার রাতে বোয়ালখালীতে গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গতকাল শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আবু সুফিয়ান বলেন, ‘দিনের ভোট রাতে নেওয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যার যে মিশন শুরু করেছে আমাদের গাড়িবহরে হমলা তারই বহিঃপ্রকাশ। উপ-নির্বাচনের আগে এ হামলার মাধ্যমে জনগণকে আতঙ্কিত করতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ। কারণ তারা জানে, ভোটের মাধ্যমে জয়ী হতে পারবে না। তাই ৩০ ডিসেম্বরের মতো আবারো দিনের ভোট রাতে যেন সুন্দরভাবে নিতে পারে তারই প্রাথমিক মহড়া দিয়েছে। বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক একটি গণতান্ত্রিক দল। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে যে সংগ্রাম করে যাচ্ছে আগামী নির্বাচনেও সে সংগ্রাম-আন্দোলনের অংশ হিসাবে মাঠে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর পর বোয়ালখালীর পৌর মেয়র আবুল কালাম আবুকে ফোন করে সন্ত্রাসীরা হুমকি দেয়। সন্ত্রাসীরা ফোনে বলে, শেষবারের মত সতর্ক করে দিলাম, আগামীতে বোয়ালখালীতে আসতে হলে ছাত্রলীগের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম বলেন, বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই, গণতান্ত্রিক কোনো পরিবেশ নেই। দিনের ভোট রাতে নিয়ে সরকার গঠন করেছে। এটা একটি অগণতান্ত্রিক সরকার। বর্তমান নির্বাচন কমিশন ও সরকার অবৈধ। তাদের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তারপরও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে আন্দোলনের অংশ হিসাবে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনারের পতন না হলে এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, আর জনগণ তাদের অধিকার পাবে না। তাই বিএনপি দেশের মালিক জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে শীঘ্রই আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ভোট ডাকাতির মাধ্যমে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন কায়েমের যে খেলায় মেতে উঠেছে তারই অংশ হিসাবে বোয়ালখালীতে আবু সুফিয়ানের গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়েছে। বিএনপির উপর হামলা মামলা করে রাজপথ থেকে দূরে রাখা যাবে না। সরকার দেশের প্রতিটি সেক্টরকে আওয়ামী শাখা হিসাবে ব্যবহার করছে। যার কারণে বিএনপির উপর হামলার হলেও প্রশাসন এখনো নীরব ভূমিকা পালন করছে। লালদিঘি ময়দান ব্যবহার করার জন্য আমরা সব সময় প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়েছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের অনুমতি দেয় না। অথচ লালদিঘি ময়দানে অন্য সব রাজনৈতিক দল কর্মসূচি পালন করছে। অনেক ভূঁইফোড় সংগঠন লালদিঘি মাঠ ব্যবহার করতে পারলেও আমরা পাচ্ছি না। আমাদের সভা-সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। রাজপথ আমাদের ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। ঢাকায় সভা-সমাবেশের অনুমতি দিলেও চট্টগ্রামে প্রশাসন বিএনপির উপর কারফিউ জারি করেছে। তবে আগামীতে আমরা প্রশাসনের কাছে আবারো লালদিঘি মাঠ ব্যবহারের জন্য আবেদন জানাবো। যদি না দেয় তাহলে অনুমতিছাড়া সমাবেশ করবে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বর্ণনা দেন বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আবু ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাক আহমদ খান। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
বোয়ালীখালী পৌর মেয়র আবুল কালাম আবু ঘটনার বর্ণনায় বলেন, শুক্রবার রাতে আমার গাড়িতে করে আবু সুফিয়ানসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে চরণদ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির নেতা কামালা উদ্দিনের আত্মীয়ের জানাজা শেষে শহরে ফেরার পথে ২নং ওয়ার্ডের পাঠানবাড়ি স্কুলের সামনে এলে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে ২০/ ২৫ জন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। গাড়ি ভাঙচুর করে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহব্বায়ক আলী আব্বাস, মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি মো. মিয়া ভোলা, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য শেখ মো. মহিউদ্দীন, এনামুল হক এনাম, ইদ্রিস মিয়া, মোশাররফ হোসেন, মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, মঞ্জুর উদ্দীন চৌধুরী, বদরুল খায়ের চৌধুরী, কামরুল ইসলাম হোসাইনী, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ টিপু, নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী প্রমুখ।