নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি এবং সাংবাদিকতা

20

মোহাম্মদ শাহজাহান

‘দৈনিক পূর্বদেশ’ আমাদের চট্টগ্রামের অন্যতম একটি আঞ্চলিক দৈনিক। পত্রিকাটি ১০ পেরিয়ে ১১ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে।
দৈনিক পূর্বদেশ দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রামের পাঠকের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি পত্রিকা। এটা এজন্য যে, সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে পূর্বদেশ সবসময় বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে চেষ্টা করে।
বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। বিগত মেয়াদে দেশে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার ব্যাপক স¤প্রসারণের মধ্য দিয়ে তথ্যনির্ভর সমাজ গঠনের পথ এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ, লালন ও পরিচর্যায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
এদেশের গণমাধ্যম দেশ ও জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিকালে এই পত্রিকাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাছাড়া অতীতের ধারাবাহিকতায় সাহসী, নির্মোহ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চর্চায় দৈনিক পূর্বদেশ অব্যাহত ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার।
একইসঙ্গে সত্যকে তুলে ধরতে একটা আপসহীন অবস্থান আছে চট্টগ্রামের এই জনপ্রিয় দৈনিক। সত্য প্রকাশের ক্ষেত্রে দল, মত ও মতাদর্শিক বিশ্বাস প্রাধান্য পায় না। পূর্বদেশ প্রতিবেদনে দল-মত নির্বিশেষে এ ধরনের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি সবার কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয় বিষয়। পূর্বদেশ প্রতিষ্ঠার পর জনপ্রিয়তা অর্জন এবং দীর্ঘ ১০ বছর পেরিয়েও সেই জনপ্রিয়তা ধরে রাখার ক্ষেত্রে এ বিষয়টা প্রধান অবলম্বন হিসেবে কাজ করছে।আমরা জানি প্রতিটি মানুষের মধ্যে সাংবাদিক মনস্কতা রয়েছে। জন্মের পর থেকেই সে জানতে চায়, বুঝতে চায়, বিভিন্ন প্রশ্ন করে। আর জানার এ অদম্য স্পৃহাই একজন সাংবাদিকের প্রাণশক্তি। তেমনি সংবাদ চেপে যাওয়া বা প্রকাশ না করা, কিংবা সংবাদে রং চড়ানো বা বর্ণ হরণের কোনটাই কাম্য নয়। মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিকরা সত্যের যে বিবরণ তুলে আনেন, সংবাদপত্রের কার্যালয়ে দায়িত্বরত সম্পাদক তা যথাযথভাবে সম্পাদনার মাধ্যমে পরিবেশন করেন- উভয়ের কাজে অঙ্গীকারবোধ ও সুসমন্বয় অনুপস্থিত থাকলে সেটি পাঠক তথা দেশের মানুষের কাছে সঠিক বার্তাটি পৌঁছাতে পারে না।
আমরা যারা সাংবাদিকতা পেশায় আছি তাদের বুঝতে হবে এ পেশার একটা আলাদা মর্যাদা আছে। মনে রাখতে হবে, সাংবাদিকতা কেবলই একটি পেশা নয়। এ পেশার চরিত্রই হল- আপনার দেশের মানুষের জন্য আপনি কিছু করবেন। অর্থ উপার্জনের জন্য এ পেশা নয়। সেজন্য অন্য অনেক পেশা আছে। অনেকেই বিভিন্নভাবে এ পেশার অমর্যাদা করছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। সততা না থাকলে সাংবাদিকতা থাকে না। সত্য বলতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হলেও সত্য বলতে হবে। পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বদ্ধপরিকর হতে হবে।
আমরা আশা করি দৈনিক পূর্বদেশ পাঠকের চাহিদা ও পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড পাঠকের মাঝে পৌঁছে দিতে সচেষ্ট হবে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, বিজ্ঞানমনস্ক ও দেশপ্রেমিক প্রজন্ম তৈরিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।
দৈনিক পূর্বদেশ অতীতের ন্যায় আগামী দিনেও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন এবং পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দেশ ও দশের উন্নয়নে নিবেদিত থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, সাংবিধানিক শাসনের স্বার্থে পূর্বদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আগামী দিনেও দৈনিক পূর্বদেশ দেশ ও জাতির সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।