নিত্যপণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে

21

নিজস্ব প্রতিবেদক

উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ায় বাজারে দেশি পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে ভোজ্যতেল, চিনি, আটা, ময়দাসহ বিভিন্ন আমদানি পণ্যের দাম দফায় দফায় বেড়ে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে ইতোমধ্যে। এ কারণে ভোগ্যপণ্যের বাজারে ‘দামবৃদ্ধির অস্বস্তি’ চলছেই।
গতকাল শুক্রবার নগরীর ষোলশহর কর্ণফুলী সুপার মার্কেট ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়। ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দামবৃদ্ধি, জাহাজ ও পণ্য পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির কারণে বাজারে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়তি রয়েছে। তবে দেশি পণ্যের দাম আগের তুলনায় কমতির দিকে রয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা আটা গত সপ্তাহে ৩৩ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ৩৫ টাকা, ময়দা ৪৩ টাকা থেকে তিনি টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত আটা ৪২ ও ময়দা ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনির দাম ৭৬ থেকে ৭৮ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হলেও ৮০ থেকে ৮২ টাকা দরে বিক্রি করছে খুচরা দোকানিরা। পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিনে লিটারে দুই টাকা বেড়ে ১৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার খোলা পাম তেলে দুই টাকা বেড়ে ১৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে মসুর ডাল। আমদানি করা প্রতি কেজি মসুর ডাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা ও দেশি মসুর ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, আদা ৭০ থেকে ১শ’ টাকা, হলুদ ১৬০ ও শুকনা মরিচ ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যমতে, শীতের সবজি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। সে অনুযায়ী দেশি আলু কেজি ৩০ টাকা, ফুলকপি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মূলা ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, কাঁচা মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, পাকা মিষ্টি কুমড়া ৩৫ টাকা, শিম, মরিচ ও ধনিয়া পাতা ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, গাজর ১১০ টাকা, শসা ২৫ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, লাউ ৩০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, তিতা করলা ৬০ টাকা, কাকরোল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, লেবুর জোড়া ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লালশাক, পালংশাক, মূলাশাক, সরিষা শাকের আটি ১৫ থেকে ২০ টাকা এবং পুঁইশাক ২০ ও লাউশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে আটি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নদীর চিংড়ি আকারভেদে কেজি ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে, সামুদ্রিক লাল চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা। এছাড়া ট্যাংরা মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। রুই (দেড় কেজি ওজনের) ৩০০ টাকা, আইর মাছ ৬০০ টাকা, বোয়াল ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ টাকা, লেয়ার ২২০ টাকা, সোনালী ৩০০ টাকা আর দেশি মুরগি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬২০ টাকা আর খাসি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মেয়র গলি এলাকার বাসিন্দা মো. আবু জাহেদ বলেন, সবজির দাম তুলনাম‚লক কমলেও তেল, চিনি, আটা, ময়দার দাম দীর্ঘদিন ধরে আকাশছোঁয়া। ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়ানোর সুযোগ পেলে আর কমাতে চান না। সরকারের উচিত বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা বাজার কর্মকর্তা সেলিম মিয়া দৈনিক পূর্বদেশকে বলেন, শীতের সবজি বাজারে পর্যাপ্ত রয়েছে।দাম অনেকটা কমতির দিকে, সামনে আরও কমবে। এছাড়া ভোগ্যপণ্যের বাজারেও আমরা নজর দিচ্ছি। অনিয়ম পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারও কোন অভিযোগ থাকলে সরাসরি আমাদেরকে জানাতে পারবেন।