নিজের করা মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তারের আবেদন পিবিআই’র

7

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের নিজের দায়ের করা মামলায় তাকেই গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই ঘটনায় মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বাবুল আক্তার এখন কারাগারে আছেন। স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তারের এ আবেদন করা হল।
চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। আদালত ৯ জানুয়ারি অভিযুক্তের উপস্থিতিতে শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।
পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, ‘স্ত্রী খুনের সঙ্গে মামলার বাদী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার তথ্যপ্রমাণ ইতোমধ্যে আমরা তদন্তে পেয়েছি। এজন্য নিয়ম অনুযায়ী তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালত ৯ জানুয়ারি শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।’
প্রসঙ্গত: ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
কিন্তু হত্যাকাÐের পর থেকেই নানাভাবে স্ত্রী খুনে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার আলোচনা শুরু হয়। ঘটনার পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ্যে আনেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টিকারী চাঞ্চল্যকর এই মামলার।
২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।
ওই দিনই (১২ মে) বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।