নিখোঁজের একদিন পর বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

45

রাউজানে বিদেশ ফেরত বৃদ্ধ নুরুল আলমকে (৬০) কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে জখম করে তুলে নিয়ে যাওয়ার একদিন পর গতকাল রবিবার হাটহাজারী থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে হাটহাজারীর শিকারপুরের চন্দ্রাবিল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
লাশ উদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গুনীয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেপায়েত উল্লাহ, মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরির্দশক আব্দুল করিম।
নুরুল আলমকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা দাবি করে আসছিলেন, তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের উরকিরচর ইউনিয়নের উরকিরচর বাজারে নুরুল আলমকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করা হয়। তিনি একই ইউনিয়নের হারপাড়া গ্রামের করম আলী হাজীর বাড়ির সুলতান আহমদের পুত্র।
জানা গেছে, নুরুল আলম ৩ বছর আগে আরব আমিরাত থেকে চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন। এরপর একটি ট্রাক কিনে ভাড়ায় দেন। এর আয় দিয়ে সংসার চালাতেন। আর তার দুই ছেলে ওমান প্রবাসী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নুরুল আলমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শনিবার সকাল ৭টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে উরকিরচর বাজারে যান নুরুল আলম। এ সময় ৪-৫ জন দুর্বৃত্ত তাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে একটি অটোরিকশায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এরপর পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়েও গতকাল রবিবার দুপুরে ১টা পর্যন্ত হদিস পাননি। এ সময় তার ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের সড়কের একপাশে রক্তাক্ত দুটি স্যান্ডেল পড়ে আছে। সড়কের উপর ছোপ ছোপ রক্ত ছড়িয়ে আছে। বাজার থেকে উত্তরদিকে যে পিচঢালা সড়কটি উরকিরচর গ্রামের দিকে গেছে, সেই সড়কের উপর ছোপ ছোপ রক্তের দাগ।
স্থানীয় অটোরিকশা চালক মুহাম্মদ রাসেল বলেন, সকালে ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে একটি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
নুরুল আলমের স্ত্রী নুর বানু বলেন, গত রমজান মাসে বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা নগদ ২ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বার্ণালংকার নিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে নুরুল আলমের শত্রæতা বাড়ে।
তিনি জানান, শনিবার বিকেলে অভিযোগ দিতে থানায় গেলে ওসি না থাকায় মামলা করতে পারিনি। তবে ওসি থানায় এলে আসতে বলেন কর্তব্যরত কর্মকর্তা।
নিহতের মেয়ে ববি আকতার বলেন, এলাকার যুবলীগ নেতা আবু, হারুনসহ ৬/৮ জন বাবাকে হত্যা করেছে। তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি।
এ ব্যাপারে রাউজান থানার ওসি কেপায়েত উল্লাহ বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মামলা হচ্ছে, তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।