নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু

9

পূর্বদেশ অনলাইন
রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী এবং ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মোরসালিন (২৬) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া এ তথ্য জানান। বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘নিহত মোরসালিন রেডিমেড কাপড়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের রসুলপুর এলাকায় থাকতেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে।’ নিহত মুরসালিনের ভাই নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমার ভাই নিউমার্কেটের একটি রেডিমেড কাপড়ের দোকানের কর্মচারী ছিল।’ মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিন মোরসালিন আহত হন। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার ভোরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম রসুলপুরে স্ত্রী অনি আখতার মিতু এবং দুই মেয়ে সুমাইয়া ইসলাম লামহা (৭) ও আমির হামজাকে (৪) নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন মোরসালিন। মোরসালিনের স্ত্রী অনি আখতার মিতু জানান, নিউমার্কেটে একটি শার্টের দোকানে মাসে ৯ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন তার স্বামী। তা দিয়েই সংসার চলতো। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার কাজের উদ্দেশ্যে সকালে বাসা থেকে বের হয়ে ফেরেনি মোরসালিন। এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ নামে এক ডেলিভারি ম্যানের মৃত্যু হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও দুজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন মোহাম্মদ ইয়াসিন (১৮) ও মোহাম্মদ কাকন চৌধুরী (২০)। উল্লেখ্য, সোমবার রাত ১১টার দিকে কথাকাটাকাটির জেরে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হন। যার মধ্যে দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন। দুই দিন সংঘর্ষের কারণে নিউমার্কেট এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ থাকায় ঈদ বাজারে ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তাই ওই এলাকায় শান্তিপূর্ণ সহবস্থান ও দোকান খুলে দিতে বুধবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যবসায়ীরা। পরে রাতে আবারও ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতারা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষে হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়াসহ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সব দাবি মেনে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) থেকে নিউমার্কেট এলাকার সব দোকান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।