নিউটনের তৃতীয় সূত্র ‘শুধরে দিতে’ মোদীর সহায়তা চান হিমাচলের বিজ্ঞানী

52

ভারতের হিমাচল প্রদেশের বিজ্ঞানী অজয় শর্মার বিশ্বাস, ৩৩৩ বছর ধরে নমস্য নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে; আর তা প্রমাণ করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সহায়তা চাইছেন তিনি।
স্যার আইজাক নিউটনের তিনটি গতিসূত্রের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে পুরো ক্লাসিক্যাল মেকানিক্স বা চিরায়ত বলবিদ্যা। তৃতীয় সূত্র বলেছে, প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।
বিশ বছর আগে, ১৯৯৯ সালে একটি জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে অজয় শর্মা দাবি করেন, তাত্ত্বিকভাবে এই সূত্রে পরিবর্তন আনা সম্ভব। সেখানে বলা হয়, তৃতীয় সূত্রের সেই প্রতিক্রিয়া সমান, কম বা বেশিও হতে পারে।
কিন্তু তাত্তি¡ক ওই ধারণাকে পরীক্ষাগারে প্রমাণ করতে আরও কিছু গবেষণা প্রয়োজন। সেজন্য অজয় শর্মার দরকার টাকা।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসে শিমলার উপ-শিক্ষা কর্মকর্তা অজয় শর্মা প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে ওই টাকাই অনুদান হিসেবে চেয়েছেন বলে জানানো হয় ভারতের ইংরেজি দৈনিক স্টেটসম্যানের এক প্রতিবেদনে।
জীবনের ৩৬ বছর নিউটন, আইনস্টাইন আর আর্কিমিডিস নিয়ে গবেষণা করে কাটিয়ে দেওয়া অজয় বলেন, “৩৩৩ বছরের পুরনো নিউটনের তৃতীয় সূত্রটির পরীক্ষামূলক সংস্কার করা সম্ভব; আর এজন্য কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। দেশ ও বিদেশের নামি বিজ্ঞানীরা এই পরামর্শই দিয়েছেন। এজন্য খরচ হবে ১০ থেকে ১২ লাখ রুপি।”
নিউটনের তৃতীয় সূত্র কোনো রকম ব্যতয় ছাড়া সকল ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য বলে ধরা হলেও অজয়ের দাবি, বস্তুর আকার বিবেচনায় না নেওয়াটা এই সূত্রের একটি বড় সীমাবদ্ধতা।
বস্তু গোলাকার, অর্ধবৃত্তাকার, ছাতার মত ত্রিভূজাকার, পাইপের মত লম্বা, কোনাকৃতি, সমতল বা অসম আকারের হলেও নিউটনের তৃতীয় সূত্রে তা কোনো প্রভাব ফেলে না। ওই সূত্র অনুযায়ী, ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সব সময়ই সমান। কিন্তু অজয়ের দাবি, প্রতিক্রিয়া অবশ্যই বস্তুর আকারের সাপেক্ষে কম, বেশি বা সমান হতে পারে। “বিষয়টি চূড়ান্তভাবে প্রমাণের জন্য সূ² কিছু পরীক্ষা করা দরকার। এখন পর্যযন্ত নিউটনের তৃতীয় সূত্র কোনো পরীক্ষা ছাড়াই মেনে নেওয়া হয়েছে; এটা বিজ্ঞানসম্মত নয়।”
ভারতের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন গত জুলাইয়ে অজয়ের এই গবেষণার প্রস্তাব দিল্লির কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের মহাপরিচালকের কাছে পাঠান। কিন্তু সেখান থেকে কাক্সিক্ষত সাড়া এখনও পাননি অজয়।
ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেসের আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘কারেন্ট সায়েন্স’লিখেছে, নিউটনের তৃতীয় সূত্রের ভাষ্যে ‘অস্পষ্টতা’ সত্যিই আছে। আর বিষয়টি সামনে আনার জন্য অজয়ের অভিনন্দন প্রাপ্য।