নিউজিল্যান্ডের হৃদয় ভেঙে নতুন চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

6

পূর্বদেশ ক্রীড়া ডেস্ক

নিউজিল্যান্ডের দীর্ঘশ্বাসটা আরও লম্বা হলো। তাসমান পাড়ের দুই প্রতিবেশীর লড়াইয়ে শেষ হাসিটা হাসল অজিরা। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার, ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর এবার প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু কিউইদের এবারও বাড়ি ফিরতে হচ্ছে হতাশা নিয়ে। কেইন উইলিয়ামসনের গোমড়া মুখের হাসিটা কোটি ক্রিকেট সমর্থকের মনে দাগ কেটে দিয়েছে এতক্ষণে। তবে অ্যারন ফিঞ্চের চওড়া হাসি বলে দিচ্ছিল শুধু ওয়ানডে না, টি-টোয়েন্টিতেও সেরা হতে পারে তারা।
দুবাই স্টেডিয়ামে টস ছিল অনেক বড় ফ্যাক্টর। বলা হচ্ছিল যে দল টস জিতবে, অর্ধেক ম্যাচ আগেই জিতে যাবে তারা। এর পেছনে বড় কারণ, চলতি বিশ্বকাপে ফাইনালের আগে অনুষ্ঠিত হওয়া ১২টি ম্যাচে জয় পেয়েছে পরে ব্যাট করা দল। আগে ব্যাট করে জয় পাওয়া একমাত্র দল ছিল নিউজিল্যান্ড। হারিয়েছিল স্কটল্যান্ডকে।
শেষ পর্যন্ত টসটাই ফ্যাক্টর হলো। আরব আমিরাতে শীতের শুরুর এই সময়টায় সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে হালকা কুয়াশা পড়তে শুরু করে। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে কিউইদের জন্য।
১৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অজি ওপেনার অ্যারণ ফিঞ্চ তৃতীয় ওভারে সাজঘরে ফেরেন ট্রেন্ট বোল্টের বলে ডিপ মিড-উইকেটে থাকা ড্যেরেল মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
এরপর ঝড়ের বেগে রান তুলতে থাকে ডেভিড ওয়ার্নার-মিচেল মার্শ জুটি। দুজনের জুটি ভাঙে ৫৯ বলে ৯২ রান তুলে ওয়ার্নারের ৩৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলে বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে দলীয় ১২৭ রানের মাথায় বিদায়ের মধ্যদিয়ে।ওয়ার্নার ফিরলেও খেই হারাননি মার্শ। ৩১ বলে ফিফটি হাঁকিয়ে রেকর্ড করেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে দ্রুততম ফিফটি হাঁকানোর।
শেষ পর্যন্ত মিচেল অপরাজিত থেকেছেন ৭৭ (৫০) রানে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে ৩৯ বলে ৬৫ রানের জুটি, ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে টিম সাউদিকে রিভার্স সুইপ করে চার হাঁকিয়ে ৮ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন ম্যাক্সওয়েল।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। সৌদি ৩.৫ ওভারে দেন ৪৩ রান, ইশ সোধি ৪ ওভারে দেন ৪০ রান।
এর আগে টস জিতে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ককে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানান অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ব্যাট করতে নেমে দুই কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল আর ড্যারেল মিচেল জুটি ৩ ওভার ৫ বলে তোলেন মাত্র ২৮ রান। জশ হ্যাজেলউডের বলে ম্যাথু ওয়েডের হাতে ক্যাচ দিয়ে মিচেল ফিরেন ১১ (৮) রান করে।
এরপর ৪৮ রানের জুটি গড়েন গাপটিল আর কেইন উইলিয়ামসন। গাপটিল ছিলেন ধীর। রানের চাইতে বল খেলেছেন ৭টি বেশি। শেষ পর্যন্ত ৩৫ বলে ২৮ রান করে বিদায় নেন অ্যাডাম জাম্পার বলে ২৮ রান করে স্টয়নিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
গাপটিলের ফেরার পর দ্রুত রান তুলতে সময় নেননি উইলিয়ামসন। ব্যক্তিগত ২১ রানের মাথায় ক্যাচ দিলেও ধরতে পারেননি হ্যাজেলউড। শেষ পর্যন্ত সেই স্টার্কের ওপরেই তোলেন ঝড়টা। ইনিংসের ১৬তম ওভারে ৪টি চার ও একটি ছয় হাঁকান কিউই অধিনায়ক। ৩২ বলেই তুলে নেন ফিফটি। স্টার্ক ৪ ওভারে দেন ৬০ রান। উইলিয়ামসনকে সঙ্গ দেওয়া ফিলিপস করেন ১৭ বলে ১৮ রান। উইলিয়ামসন পৌঁছে গিয়েছিলেন শতকের অনেক কাছে তবে, হ্যাজেলউডকে লং-অফে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৪৮ বলে ১০টি চার ও ৩টি ছয়ে ৮৫ রানের মাথায় ক্যাচ দেন স্টিভেন স্মিথের হাতে।
শেষ দিকে জিমি নিশামের ১৩ (৭) আর টিম সেইফার্টের ৮ রানে ভর করে ৪ উইকেটে ১৭২ রান সংগ্রহ দাঁড় করায় কিউইরা। অজিদের পক্ষে ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন হ্যাজেলউড। ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে জাম্পা নেন ১ উইকেট।