নিঃসঙ্গ সুজনের পাশে নেই কেউ

6

পূর্বদেশ ডেস্ক

যান্ত্রিক এই শহুরে জীবনে শব্দ দূষণ যেন আতঙ্ক। যানবাহনে কারণে অকারণে বেজে চলা শব্দ যাপিত জীবনে ফেলছে প্রভাব। দিনের পর দিন শব্দ দূষণের এ অত্যাচার মানুষের মধ্যে বাড়াচ্ছে মানসিক রোগ। তবুও ভ্রুক্ষেপ নেই কারো।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও যখন নির্বাক প্রশাসন তখন নীরবে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন সুজন বড়ুয়া নামের এক ব্যক্তি। প্রায় ৩২ দিন ধরে নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে বসে প্ল্যাকার্ড হাতে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিবাদ। কারো কোনো সাড়া না পাওয়া নতুন করে শুরু করেছেন অনশন কর্মসূচি।
নগরের চেরাগি পাহাড় মোড়ে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে এ কর্মসূচি শুরু করলেও গতকাল বুধবারও তিনি বসেন অনশনে। প্রাথমিকভাবে তিন দিন এ অনশন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
সুজন বুড়য়া বলেন, কারণে অকারেণ হর্ণ বাজানো নিয়ে চালকদের সঙ্গে অনেকবার বাকবিতÐা হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো ভাবেই মানতে চায় না। এ নিয়ে অনেকবার প্রতিবাদ করেও হেনস্তার শিকার হয়েছি। আসলে আমি একা কি-ই বা করতে পারি। তাই আমার এ প্রতিবাদ।
তিনি বলেন, হাই কোর্টের রায়ে হাইড্রলিক হর্ন নিষিদ্ধ করা হলেও তা বন্ধে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে এ উৎপাত আরও বেড়েছে। শব্দ দূষণ আমাদের কি ক্ষতি করছে আমরা তা বুঝতে না পারলেও দীর্ঘ মেয়াদি যে ক্ষতি হচ্ছে তা আমরা অনুধাবন করতে পারছি না।
শব্দদূষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার সুজন বড়ুয়া চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা। তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্য কেনাবেচার কাজ করেন। এর আগেও চলতি বছরের ২১ জুলাই থেকে এ আন্দোলন করে আসছেন তিনি।
সুজন জানান, প্রায় ৩২ দিন কর্মসূচি পালন করেছি। এর মধ্যে গত ১ থেকে ৩ অক্টোবর চেরাগী পাহাড় মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। এখন তিন দিনের অনশন কর্মসূচি পালন করছি।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে সুজন বড়ুয়া আন্দোলন করে আসলেও পাশে নেই কেউ। নিজের দুই সন্তান সদ্য এসএসসি পরীক্ষা শেষ করা ছেলে অভিষেক বড়ুয়া ও মেয়ে চন্দ্রিমা বড়ুয়া ছাড়া এখনও পর্যন্ত পাশে দাঁড়ায়নি কোনো মানুষ। এমনকি প্রশাসনের কোনো কর্তা ব্যক্তি কিংবা পরিবেশবাদী সংগঠনের কোনো সদস্যকেও দেখা যায়নি পাশে দাঁড়াতে।
কেউ খোঁজ না নিলেও এতে কোনো আক্ষেপ নেই জানিয়ে সুজন বড়ুয়া বলেন, আমি আন্দোলন করে যাচ্ছি অনেক দিন ধরে। যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাই সবাই আমাকে পাগল বলে। কিন্তু আমি হাল ছেড়ে দিই নি। যে যাই বলুক আমার এ আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রশাসন থেকে কেউ না আসলেও আমি চাই আমার বার্তাটুকু প্রশাসনের কাছে পৌঁছাক।