নাসিমন ভবনের সামনে বিএনপির সমাবেশ আজ

61

দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনেই চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। ২৭টি শর্তে সমাবেশ করার এ অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। অনুমতি পাওয়ার পর থেকে বিএনপি সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
আজ বেলা ২টা থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
নগর পুলিশের উপ কমিশনার (বিশেষ শাখা) আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, নাসিমন ভবনের সামনেই সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বিএনপিকে। এজন্য ২৭টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। তারা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমাবেশ করতে পারবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে লালদীঘির পাড়স্থ জেলা পরিষদ চত্বর অথবা কাজীর দেউড়ি মোড়ে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত নগর পুলিশ দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দিল। সমাবেশে যোগ দিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় অনেক নেতা ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছেন। সমাবেশ সফল করার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনাও দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নূর আহমদ সড়কে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছি। আমরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে কাজে হাত দিয়েছি। আশা করছি, সমাবেশে বিপুল মানুষের সমাগম হবে। সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হবে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকে এসেছেন, আরও অনেকে আসবেন। সমাবেশ থেকে আমাদের নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনের একটি দিক নির্দেশনা আসবে। আন্দোলনের নতুন মাত্রা শুরু হবে এখান থেকে।
এদিকে গতকাল নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে সমাবেশের প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। চট্টগ্রামের মাটি বিএনপি ও খালেদা জিয়ার ঘাঁটি। চট্টগ্রাম হচ্ছে আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। এ চট্টগ্রাম থেকেই শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এখান থেকেই বেগম খালেদা জিয়াকে দেশনেত্রী উপাধি দেয়া হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনও বিভাগীয় সমাবেশ থেকে শুরু হবে। বেগম জিয়াকে মুক্তি দেওয়া না হলে এ চট্টগ্রাম থেকেই সরকার পতনের আন্দোলনের সূচনা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সারাদেশের মানুষ আজ সোচ্চার। কিন্তু সরকার প্রধানের ইশরায় তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়া জামিন পেলেও তার মুক্তিতে সরকার বাধা দিচ্ছে। অবৈধ সরকার জানে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে জনতার জোয়ারে তারা ভেসে যাবে।
প্রস্তুতি সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সমাবেশের সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নামে যে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, তা প্রত্যাহার করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় দেশে জনবিস্ফোরণ ঘটবে। সেই বিস্ফোরণে এ অবৈধ সরকারের পতন হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে বীর চট্টলা বিএনপির ঘাঁটি। বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামের আওয়াজে অবৈধ সরকারের মসনদ কেঁপে উঠবে। সরকারকে বাধ্য করা হবে বেগম জিয়ার সকল মামলা স্থগিত করে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ প্রাণপ্রিয় নেত্রীর মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি নিয়েছে। এ শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যোগ দিতে মানুষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে।
নগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলার কারণে বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। শেখ হাসিনা গায়ের জোরে বেগম খালেদা জিয়াকে আটকিয়ে রেখেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমাবেশ সফল করুন।
প্রস্তুতিসভা থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সমাবেশে আসার সময় শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ছাড়া অন্য কোন নেতাকর্মীর নামে ব্যানার, ফেস্টুন না আনার অনুরোধ জানানো হয়।