নার্সিং শিক্ষা ও সার্ভিস

37

বাংলাদেশের নার্সিং শিক্ষা ও সার্ভিসের গুণগত মান নিম্নমুখী। নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছে না। বেসরকারি পর্যায়ে আশঙ্কাজনকভাবে নার্সিং কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট বেড়ে চলেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা ও সেবা বিভাগের এ ব্যাপারে তদারকির কোনো বালাই নেই। তাদের অনেকেরই নেই হাসপাতালের নিজস্ব জায়গা। ভাড়া করা স্থানে কয়েকটি রুম দেখিয়ে এবং নামমাত্র কয়েকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমঝোতা স্বাক্ষর নিয়ে এইসব প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর নবায়ন হচ্ছে। এদের নেই মানসম্পন্ন শিক্ষক, ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরি রুম। বাংলাদেশ নার্সিং এবং মিডওয়াইকারি কাউন্সিলে নার্স এবং মিডওয়াইফদের রেজিষ্ট্রেশন নবায়ন ছাড়া তেমন কোনো কাজ নেই, স¤প্রতি একটি জরিপে এ সমস্ত বিষয় উঠে এসেছে।
বেসরকারি পর্যায়ের ২০৪টি নার্সিং ইনস্টিটিউট, ৬৬টি নার্সিং কলেজ এবং ২৮টি মিডওয়াইকারী ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইকারি কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে ১০ হাজারের বেশি নার্স ও মিডওয়াইফ পাশ করে বের হচ্ছেন, এদের অনেকেই সার্টিফিকেট সর্বস্ব! যথাযথভাবে ইনজেকশন ও ইনসুলিন দেওয়া, ক্যাথেটার পরানো, বেসিক লাইফ সাপোর্ট দেওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে অদক্ষ তারা। হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, রোগীদের বেডশিট-বালিশের কভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে জীবাণুমুক্তভাবে রোগীদের সেবা প্রদান করা নার্সিং সার্ভিসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু হাসপাতালসমূহে গেলে রোগীদের অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট চোখে পড়ে। বিদেশে চিকিত্সা নিতে যাওয়া তেমন কোনো আহামরি বিষয় না হলেও দেশের অনেক অর্থ চিকিৎসার নামে বিদেশ চলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এদেশের ডাক্তার-নার্সদের বিদেশে চাকরির বিপুল সম্ভাবনাময় বাজারও আমরা হারাচ্ছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ফরাজী
চেয়ারম্যান,
বাংলাদেশ স্কিল ডেভলপমেন্ট ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, বাংলামোটর, ঢাকা।