নানিয়ার চরবাসীর স্বপ্নের সেতু আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

63

রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটি জেলার নানিয়ার চরের মানুষের স্বপ্নের সেতু আজ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার (১২জানুয়ারি) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই সেতুর উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
সেতুটি নির্মাণ হওয়াতে নানিয়ার চরবাসীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। দীর্ঘ বহু বছরের ভোগান্তি দূর হয়েছে। এখন মানুষ সহজে যাতায়াতসহ সকল প্রকার পণ্য পরিবহন করতে পারবে।
সেতুটি হওয়াতে পর্যটন ব্যবসা বাড়বে, স্কুলকলেজ শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, অসুস্থ রোগীর দ্রæত চিকিৎসা সেবা পাওয়ায় সুবিধা হবে। নানিয়ার চরের সাথে আরো তিনটি উপজেলার যোগাযোগ সহজ হয়েছে। এ তিনটি উপজেলার রাস্তাগুলো নির্মাণ করা হলে সেতুটির গুরুত্ব আরো বাড়বে।
গত ৮ জানুয়ারি থেকে ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন জমকালো সাজে সাজাচ্ছে সেতুটিকে। সেতুর ফেইরি লাইটের ঝিলিমিলি আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। রাতের আঁধারও ঘুচে গেছে। সেতুর দু’পাশ ছেয়ে গেছে নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুনে। গত তিন দিন ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেতুর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যে কারণে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। আজ সেতু উদ্বোধনে খুশি পাহাড়ি-বাঙালি সকলেই।
ইানিয়ার চর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, নানিয়ার চর চেঙ্গি সেতু নির্মাণে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী ও সেতু ও সড়ক যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর ও স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারকে। আমরা নানিয়ার চরবাসী অত্যন্ত খুশি ও আনন্দিত। এখন বাকি ১৬ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের দাবি করছি। এই সেতুটি রাঙামাটি সদর, খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা, লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার লোকজন যাতায়াত করতে পারবে। তবে সেতুর সংযোগ সড়কগুলো করতে হবে। রাস্তাগুলো করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাই।
সেতু নির্মাণের পাশাপাশি তিনি নানিয়ার চরে পর্যটন হোটেল-মোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। তিনি নানিয়ার চর চেঙ্গি সেতুটি শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফের নামে নামকরণের দাবি জানান।
নানিয়ার চর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রিপন দাশ ও নানিয়ার চর বাজার ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি আবদুর রহমান (৬০) বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ জানুয়ারি সেতুটি উদ্বোধন করবেন। ইতিমধ্যে সেতু উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সড়ক বিভাগ ও সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে এবং সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা হয় ৩০ জুন ২০২১ সালে। বালুখালী-ঘুনধুম সীমান্ত সংযোগ সড়ক এবং বগাছড়ি- নানিয়ারচর- লংগদু সড়কের ১০ কিলোমিটারে চেঙ্গি নদীর উপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির উদ্বোধন করা হবে। সেতু নির্মাণ এবং সেতুর জায়গা ও সড়কের জন্য জায়গা অধিগ্রহণসহ সর্বমোট ব্যয় করা হয়েছে ২২৫ কোটি টাকার মত।
আজ সেতুটি উদ্বোধনের সময় পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর, সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রæ চ্যেধুরী, সেনাবাহিনীর ঊধ্বর্তন পদস্থ কর্মকর্তা, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, সড়ক বিভাগের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা, পুলিশ সুপারসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদকর্মীগণ ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।