নানিয়ারচর চুনিলাল সেতুর নামফলক উন্মোচন ৬৫ পরিবারের ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার অভিযোগ

44

রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটির নানিয়ারচরের চুনিলাল সেতুর নামফলক উন্মেচান করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় সেতু এটি। রোববার সকালে সেতুটির নামফলক উন্মোচন করেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। এ সময় উপজেলা প্রশাসনিক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাসহ চুনিলাল দেওয়ানের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে নামফলক উন্মোচনের পরপরই দুপুরে ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সেতুটি নির্মাণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন। এ সময় তারা বলেন, নানিয়ারচর সেতু নির্মাণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আজ পর্যন্ত ৬৩ পরিবার তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পায়নি। সেতুটি নির্মাণ করায় তারা খুশি, অথচ তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পরিশোধ নিয়ে নানা ধরনের টালবাহানা করা হচ্ছে। অবিলম্বে তাদের ক্ষতিপূরণ পরিশোধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন তারা। মানববন্ধনে মো. আলমগীর, জাকির হোসেন, জবেদা, মেরি চাকমাসহ অন্য ক্ষতিগ্রস্তরা উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়ারচর-বগাছড়ি সড়কে চেঙ্গি নদীর ওপর ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২২৭ কোটির অধিক টাকা ব্যয়ে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের নভেম্বর এবং শেষ হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বাস্তবায়িত সেতুর নির্মাণকাজ করে সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (২০ ইসিবি)। নির্মাণ শেষে ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি সেতুটির ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর স্থানীয়দের দাবি বিবেচনা করে প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী চুনিলাল দেওয়ানের নামে সেতুটির নামকরণ করে সরকার। ৩ জানুয়ারি সরকারের সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় নামকরণের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
চুনিলাল দেওয়ান ১৯৩৪ সালে কলকাতা সরকারি আর্ট অ্যান্ড ক্রাফ্ট কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রাচ্য বিভাগে ডিপ্লোমা পাস করেন। তিনি ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সহপাঠী। চুনিলাল দেওয়ান একাধারে চিত্রশিল্পী, গায়ক, গীতিকার, সুরকার, কবি ও ভাস্কর ছিলেন। এছাড়া নানিয়ারচরের দুই মৌজার হেডম্যান ও নানিয়ারচরবাজার চৌধুরী ছিলেন। তার জন্ম ১৯১১ সালের ৩ ফেব্রæয়ারি এবং ১৯৫৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, নানিয়ারচরের চেঙ্গি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করায় পাহাড়ের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। উন্মোচিত হয়েছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বার। চুনিলাল দেওয়ান ছিলেন একজন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী। তিনি তিনি দেশ, মাটি, দেশের মানুষ ও প্রকৃতিকে ভালোবেসেছিলেন। তার অবদান বিশাল। তাই তাকে স্মরণীয় করে রাখতে এলাকার জনগণের দাবি বিবেচনা করে নানিয়ারচর সেতুটি চুনিলাল দেওয়ানের নামে নামকরণ করেছে সরকার।